মানবতার ধর্ম ইসলামের বড় আমল ‘সুন্দর আচরণ’
মানবতার ধর্ম ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষকে আল্লাহতায়ালা খাঁটি বান্দা হিসেবে গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগি একমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য নিবেদিত করার মানসিকতা সৃষ্টির পাশাপাশি উন্নত নৈতিক চরিত্র গঠন ও উত্তম আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে ঈমানকে উচ্চতর পর্যায়ে উপনীত করা।
মানবতার ধর্ম ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষকে আল্লাহতায়ালা খাঁটি বান্দা হিসেবে গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগি একমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য নিবেদিত করার মানসিকতা সৃষ্টির পাশাপাশি উন্নত নৈতিক চরিত্র গঠন ও উত্তম আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে ঈমানকে উচ্চতর পর্যায়ে উপনীত করা।
মানুষের এসব লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে আমাদের মাঝে আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় নবীকে প্রেরণ করেছেন।কেউ হয়তো বলবেন, শালীনতা ও ভদ্রতার আচরণ এবং উত্তম নৈতিক চরিত্র অনেকটা স্বভাবগতভাবে হয়ে থাকে। চাইলেই সবাই তা অর্জন করতে পারে না। স্বভাবগতভাবে আল্লাহতায়ালা অনেককে তা দান করে থাকেন। আসলে এটাও যেমন সত্য, তেমনি কষ্ট ও সাধনা করে মানুষের স্বভাব চরিত্রে কোনো পরিবর্তন সাধন করা একেবারেই অসম্ভব- এ কথাও ঠিক নয়। এ ব্যাপারে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘শিখতে শিখতেই ইলম হাসিল করা সম্ভব। আর সাধ্য সাধনার পরাকাষ্ঠার মাধ্যমেই ধৈর্য ও কষ্ট স্বীকার আয়ত্ত করা সম্ভব। যে ব্যক্তি কষ্ট সাধন করে কল্যাণ অর্জনে ব্রতী হয়, সে কল্যাণপ্রাপ্ত হয়। আর যে ব্যক্তি অকল্যাণ থেকে বাঁচার জন্য সচেষ্ট থাকে, সে অমঙ্গল থেকে বেঁচে যায়। ’
উত্তম চরিত্র ও আচার-আচরণ অর্জনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতেও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিখিয়ে গেছেন। দোয়া করতে উৎসাহিত করে যাওয়াই প্রমাণ করে চরিত্র ও আচার-ব্যবহারকে ক্রমাগতভাবে উন্নত করার সুযোগ রয়েছে। তিনি যে দোয়া করেছেন তার মর্মার্থ হচ্ছে, ‘হে আমার প্রভু! আমাকে উত্তম চরিত্রের পথে ধাবিত করুন। আপনি ছাড়া আর কেউ সেদিকে ধাবিত করার নেই। আর আমাকে অসৎ চরিত্র ও আচরণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনি ছাড়া তা থেকে দূরে সরানোর আর কেউ নেই। ’
ইসলামে সুন্দর আচরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত পরিষ্কার। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমের মাধ্যমে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুন্দর আচরণ শিক্ষা দিয়েছেন। নবী সুন্দর আচরণের মাধ্যমে পথহারা, দিশাহারা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে এনেছেন। তাদেরও শিক্ষা দিয়েছেন উত্তম আচরণ।
অপরদিকে খারাপ ব্যবহারে সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সমাজের মানুষ তাকে অবহেলা, অবজ্ঞা ও ঘৃণার চোখে দেখে। তার কথার কোনো দাম দেয় না।
আমাদের নবী ছিলেন সদা-সত্যভাষী, হিতভাষী, শুদ্ধভাষী, সুভাষী এবং মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণকারী। তাই তিনি ছিলেন সব মানুষের সেরা। কারও সঙ্গে মুচকি হেসে কথা বলাই উত্তম আখলাক নয়। হ্যাঁ, এটাও উত্তম আখলাকের একটি অংশ। কিন্তু যদি এমন হয় যে, ওপরে ওপরে মুচকি হেসে কথা বলল, আর মন বিদ্বেষে পরিপূর্ণ থাকল- তাহলে সেটা হবে কৃত্রিমতা। এর মাঝে ইখলাস নেই এবং এটা মুমিনের শান নয়।