ধর্ম

দয়ার নবী-মায়ার নবী করিম (সা.)

সৃষ্টির প্রতি আল্লাহতায়ালার অনুগ্রহের এক বহিঃপ্রকাশ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি মানবজাতির প্রতি দয়া করেছেন। তিনি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জগৎবাসীর প্রতি রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন- ‘হে নবী, আমি আপনাকে বিশ্বজগতের জন্য কেবল রহমত করেই পাঠিয়েছি’ (সুরাতুল আম্বিয়া-১০৭)। তাই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও প্রায়ই বলতেন, ‘হে মানুষেরা, নিশ্চয়ই আমি উপহার হিসেবে প্রদত্ত এক রহমত। ’ (সুনানে দারেমি-১৫)।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দয়া সব মানুষের জন্য সমান ও ব্যাপক, বিশেষত এ উম্মতের জন্য। একটি হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই নিজের দয়া-অনুগ্রহের বিষয়টি চমৎকার উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও লোকদের উদাহরণ এমন লোকের মতো, যে আগুন জ্বালাল আর যখন তাঁর চারদিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন পতঙ্গ ও ওইসব প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পুড়তে লাগল। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে ফেরানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সেগুলো আগুনে তাকে পরাজয় করল এবং আগুনে পতিত হলো। (তদ্রুপ) আমিও তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তোমরা তাতেই পতিত হচ্ছ। (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৪৮৩)

এমন অপূর্ব দয়া ও মমতার নিদর্শন আপনি আর কোথায় পাবেন? পৃথিবী এমন দয়া-মায়ার দৃষ্টান্ত পেশ করতে অক্ষম। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এমন সীমাহীন দয়া- মায়ার স্পর্শ ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, কাছে-দূরের, বন্ধুবান্ধব এমনকি শত্রুর জন্যও অবারিত ছিল। তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ নির্দিষ্ট কোনো কাল, সময় বা ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং তাঁর দয়ার চাদর জিন-ইনসান জীব-জড় সবকিছুর মাঝেই বিস্তৃত ছিল। তাই তিনি তাঁর প্রিয় উম্মতকেও দয়ার গুণ অর্জনের শিক্ষা দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে দয়ালু ও স্নেহপরায়ণদের প্রতি দয়া করেন। ’ (সহিহ বুখারি-১২৮৪)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d