পার্বত্য চট্টগ্রাম

শান্তি চুক্তির ২৬ বছর, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নানান কর্মসূচি

পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসানের জন্য তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার এবং জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে সুদীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পার্বত্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি এটিকে রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদকালে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) মধ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটে। শান্তি চুক্তি পূর্ববর্তী সেই রক্তাক্ত সংঘাতময় দিনগুলিতে জনগণ ফিরে যেতে চায় না। তাই পার্বত্য জনজীবনে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির গুরুত্ব অনেক বেশি। এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিবদমান দুই দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হয়। সে প্রক্রিয়া এখনো চলমান।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রতিবছরের ন্যায় গুরুত্ব সহকারে পালন করতে যাচ্ছে, দীর্ঘ দুই দশকের অধিক সময় ধরে চলা পাহাড়ে সশস্ত্র সংঘাত অবসানের লক্ষে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হওয়া ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টাগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬ বছর পূর্তি । ঐতিহাসিক এ দিবসটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালনের লক্ষে নিম্মলিখিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে:

০১ ডিসেম্বর ২০২৩

সময় কর্মসূচি স্থান

সকাল ১০.০০ টা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিষয়ে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা সরকারি গণগ্রন্থাগার

সকাল ১০.৩০ টা – বেলা ০১.০০টা ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (প্রাথমিক চিকিৎসা) খাগড়াছড়ি অফিসার্স ক্লাব

সকাল ১১.০০ টা ভ্রাম্যমাণ সঙ্গীত পরিবেশনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি হতে শুরু

সন্ধ্যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির উপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রর্দশনী জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান

০২ ডিসেম্বর ২০২৩

সময় কর্মসূচি স্থান

সকাল ৯.০০ টা “পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি (শান্তিচুক্তি) একটি ঐতিহাসিক অর্জন” হিসেবে উপলব্ধি করতঃ খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালি; ঐতিহাসিক খাগড়াছড়ি স্টেডিয়াম প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট,খাগড়াছড়ি পর্যন্ত।

সকাল ১০.০০টা ২৬ বছর পূর্তির কেক কাটা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, খাগড়াছড়ি

বেলা: ০১:০০টা শিশু সদন/এতিমখানা/অনাথ আশ্রমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান

সন্ধ্যায় আলোকসজ্জা স্ব স্ব দপ্তর

এছাড়া শহর জুড়ে মাইকিংসহ বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যানার, ফেস্টুুন ও সজ্জার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ছাব্বিশ বছর পূর্তি নির্বিঘ্নে সম্পাদনের জন্য সর্ব্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে অতীতের মতো এখনও নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সরকারের আন্তরিক প্রয়াসের কারণে তিন পার্বত্য জেলার জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশি-বিদেশি এনজিও কাজ করে যাচ্ছে পার্বত্যবাসীর ভাগ্যোন্নয়নে। এমতাবস্থায়, পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করার লক্ষে সকলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা প্রদান করব এ হোক আমাদের অঙ্গীকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d