পুলিশ পরিচয়ে ৯ বিয়ে, বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে ধরা
পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ৯টি বিয়ে করেছেন তিনি। আগের বিয়ের কথা গোপন করে পুলিশের পোশাক পরা ছবি দেখিয়ে মেয়েপক্ষকে পটিয়ে ফেলতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন তিনি। বাড়িওয়ালার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা বন্দরে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম নাজমুল হক (৩০)। তিনি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধোপাদহ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ওই যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হয়েছে। বগুড়া, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিনি পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ৯টি বিয়ে করেছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তাঁর মুঠোফোন জব্দ করে পুলিশের পোশাক পরা বেশ কিছু ছবি পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার শিবগঞ্জ উপজেলার ভরিয়া গ্রামে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মঞ্জু শেখের বাড়ি ভাড়া নিতে যান গ্রেপ্তার নাজমুল হক। তখন তিনি নিজেকে গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু তাঁর কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বাড়ি ভাড়া দিতে অপারগতা জানান গৃহকর্তা। তখন ওই ব্যক্তি মঞ্জু শেখের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে চলে আসেন। বিকেলে ফোন করে মঞ্জু শেখের কাছে ওই ব্যক্তি ১০ হাজার টাকা চাইলে পুলিশ কি না নিশ্চিত হতে মঞ্জু শেখ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে জানান। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, নাজমুল পুলিশ কর্মকর্তা নন। তিনি পুলিশের এসআই পরিচয়ে ৯টি বিয়ে করেছেন। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুক ছাড়া নানা উপঢৌকন নিয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ পরিচয়ে নানা তদবিরের কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাজমুলকে আটক করে।
শিবগঞ্জের মোকামতলা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক আশিক ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় দেউলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মঞ্জু শেখ বাদী হয়ে কথিত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছেন। তিনি বগুড়া-পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ৯টি বিয়ে করেছেন বলে পুলিশ খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে।
মামলার বাদী মঞ্জু শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ব্যক্তি বাড়ি ভাড়া নিতে আসেন। তখন কথাবার্তা শুনে সন্দেহ হওয়ায় ভাড়া দিইনি।’ পরে ফোন করে টাকা ধার চাইলে বিষয়টি পুলিশকে জানান। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি তাঁদের গ্রামে একটি বিয়ে করেছেন। এ ছাড়া জয়পুরহাটে আরেকটি বিয়ে করেন। দুই স্ত্রী এলাকায় এলে বিষয়টি জানাজানি হয়। তাঁদের বাদী হয়ে মামলা করতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। মামলা না করলে প্রতারণা চলতেই থাকবে ভেবে তিনি বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।