আজও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম ও শীতল বাতাসের কারণে গত কয়েকদিন থেকে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। হিমশীতল বাতাসের কারণে উঠানামা করছে তাপমাত্রা। আর তাপমাত্রা উঠানামার কারণে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো শিশির বিন্দু, সাথে ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকছে চারপাশ। এমন কয়েক দিনের কনকনে শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষরা।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। এর আগে গতকাল, মৌসুমের ও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় এই জেলায়, ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত কয়েকদিনের কনকনে শীতের কারণে জেলার নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ তেমন বাড়ির বাইরে বের হন না। অন্যদিকে যারা শ্রমজীবী মানুষ রয়েছেন তারা জীবিকার তাগিদে বেরিয়ে পড়েছেন কাজের সন্ধানে। অনেক শ্রমজীবী মানুষ কাজ পেলেও অনেকে কাজ না পেয়ে ধরছেন বাড়ির পথ। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবতার জীবনযাপন করছে গরিব অসহায় ও শীতার্ত মানুষরা। অনেকেই শীত নিবারণের জন্য বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা রাস্তাঘাটের ফুটপাতে খরকুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
পঞ্চগড় জেলা শহরের ভ্যানচালক শাহ আলম বলেন, শীতকালে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। শীতের কারণে কারণে আমরা ভ্যান চালাতে পারি না। ভ্যান না চালালে আমাদের সংসারে চলে না।
একই কথা বলেন তেঁতুলিয়ার মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে আসা পাথর শ্রমিক আব্দুস সামাদ, তিনি বলেন, বরফের মত ঠান্ডা নদীর পানি। আর সেই নদীতে নেমে আমাদের কনকনে শীতে পাথর উত্তোলন করতে হচ্ছে। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কেউ খোঁজ খবর নিচ্ছে না। শীতবস্ত্রও কেউ দিচ্ছে না।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাসের কারণে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। তবে শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহুরুল ইসলাম জানান, চলতি শীতে জেলার পাঁচ উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজারের মতো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। যারা গরীব অসহায় মানুষ তাদের মাঝে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। শীত না যাওয়া পর্যন্ত তাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।