চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে কোরিয়ান কোম্পানির প্রস্তাব
দুটি স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনসহ চট্টগ্রাম নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ডলারের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান।
সোমবার নগরীর একটি হোটেলে দ্য কোরিয়া এনভায়রনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি ইনিস্টিটিউট (কেইআইটিআই) নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইকরণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলা হয়, এতে ব্যয় হবে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ডলার। এর মধ্যে ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ডলার অনুদান।
আর ১২ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ডলার ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে, যা দশমিক ১ শতাংশ (.১%) সুদ হারে পাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
কেইআইটিআই দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত একটি আধা-সরকারি সংস্থা।
প্রাক সম্ভ্যাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ডলার অনুদান দেবে কোরিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
এছাড়া বাকি ১২ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ডলার ঋণের মধ্যে ৮০ শতাংশ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে পাওয়া যেতে পারে, যা ৪০ বছরে পরিশোধ করা যাবে।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ম্যানেজার হং জিয়ং ওয়ান বলেন, “বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে আনন্দবাজার ও আরেফিন নগরে দুটি ল্যান্ডফিলে শহরের বর্জ্যগুলো যেভাবে রাখা হয় তা পরিবেশ ও আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিকর।
“এজন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উচিৎ দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের আধুনিক দেশগুলোর মতো আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল গড়ে তোলা। এধরনের আধুনিক ল্যান্ডফিলে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা সম্ভব এবং বর্জ্যকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষা সম্ভব।”
প্রাকসম্ভ্যাবতা যাচাই প্রতিবেদনে, পুরো বন্দর নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর একটি সার্বিক কৌশল তুলে ধরা হয়। যাতে বর্তমানে সব ধরনের বর্জ্য একসঙ্গে সংগ্রহ করার পরিবর্তে এমআরএফ (ম্যাটেরিয়াল রিকভারি ফ্যাসিলিটি) পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রস্তাব দেয়া হয়।
এর মাধ্যমে সংগৃহীত প্লাস্টিক, পিচবোর্ড, কাগজ (সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, অফিসের কাগজ, মিশ্র কাগজ), কাঁচের বোতল এবং জার, অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টিলের ক্যানসহ ধাতব পাত্র মেশিনের মাধ্যমে পৃথক করা হবে। এছাড়া ফুড ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব দেয়া হয় প্রতিবেদনে।
এছাড়া জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য প্রচারণা এবং পরিচ্ছন্নকর্মীদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ, সচেতনভাবে বর্জ্য সংগ্রহ করা, ডোর টু ডোর সংগ্রহের জন্য আধুনিক উপকরণ সরবরাহের পাশাপাশি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয় প্রতিবেদনে।
সভায় প্রকল্পটির বিষয়ে মতবিনিময় করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহিনুল ইসলাম প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন কেইআইটিআই এর প্রকৌশলী কো জুন হিয়ং ও প্রকৌশলী গিউহা চোয় সহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।