রোজার আগেই ছোলার দাম চড়া
রোজার বাকি আর মাত্র ২০ দিন। ব্যবসায়ী নেতারা বলেছিলেন, রমজান ঘিরে কোনো ধরনের সংকট থাকবে না; তাই ছোলার দাম আরো কমবে। তবে রোজা যত ঘনিয়ে আসছে সপ্তাহে সপ্তাহে ততই বাড়ছে দাম। শেষ হয়ে গেল ব্যবসায়ীদের দাম কমানোর অভিনয়! সামনের সপ্তাহে বস্তাপ্রতি ৪ হাজার টাকা, কেজিপ্রতি ১০৭ টাকা দাম ছাড়াবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে প্রতিকেজি ছোলা মানভেদে ৯৫ টাকা ১২ পয়সা থেকে ৯৭ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভালোমানের ছোলা বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬৫০ টাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে যে ছোলাগুলো আছে সেগুলোর মজুদ শেষের পথে। এ সপ্তাহ পর আমদানি হওয়া ছোলা বাজারে ঢুকবে। সেই সঙ্গে বর্তমানে ছোলা যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সেই দামে আর বিক্রি করা যাবে না। আমদানি হওয়া নতুন ছোলার দাম আরও বেড়ে যাবে। বলা যায়, বাজারে নতুন করে ছোলা ঢুকলেই হু হু করে দাম বেড়ে যাবে। কেননা, এবারের খরচ বেশি।’
রবিবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আড়তগুলোতে এখন যে ছোলা রয়েছে তা অস্ট্রেলিয়ান। মানভেদে প্রতিমণ ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫৫০ থেকে ৩ হাজার ৬৫০ টাকায়। প্রতিমণে ৩৭.৩২ কেজি হিসাবে প্রতিকেজির পাইকারি মূল্য ৯৫ টাকা (৯৫.১২ পয়সা) থেকে ৯৮ টাকা (৯৭.৮০ পয়সা) পড়ছে। তবে গত শনিবার থেকেই পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করে। গেল সপ্তাহে পাইকারিতে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮৭ থেকে ৯৪ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের উফশী ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী দীপন মহাজন বলেন, ‘বর্তমানে ছোলার দাম বাড়তি। গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। তবে জানুয়ারিতে মানভেদে প্রতি মণ ছোলা বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৫৪৫ থেকে তিন হাজার ৬৫৭ টাকায়। প্রতিমণে ৩৭.৩২ কেজি হিসাবে প্রতি কেজির পাইকারি মূল্য পড়েছিল ৯৫ থেকে ৯৮ টাকা। পরে এ দাম কমতে কমতে বস্তাপ্রতি ৩ হাজার ৬০০ টাকায় আসে। এখন আবার বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘শুধু ছোলার দাম না, বর্তমানে মটরডালের দামও বেড়েছে। কেজিপ্রতি মটর ডালের দাম ৭-৮ টাকা বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে খাতুনগঞ্জে যে ছোলাগুলো আছে। সেগুলো কম দামে বিক্রি করা গেলেও নতুন আমদানি হওয়া ছোলা আরও বাড়তি দামে বিক্রি হবে। বাজারে নতুন ছোলা এলেই বস্তাপ্রতি ৪ হাজার টাকা পড়বে।’
‘ডলার রেট বেশি হওয়ার প্রভাব ছোলা আমদানিতেও পড়ছে। তাই সেই ছোলা প্রতিকেজি ১০৭ থেকে ১০৮ টাকা পড়বে। সামনের দিকে আরও বাড়বে। রমজানের আর ২০ দিন আছে। এর মধ্যে যদি আমদানি হওয়া ছোলা বাজারে আসে তাহলে হু হু করে বেড়ে যাবে। মূলত এবারের ছোলার খরচ বেশি।’-যোগ করেন এই ব্যবসায়ী।
তবে ছোলার দাম স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন। তিনি সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘রমজানের পণ্য নিয়ে এখন পর্যন্ত বাজারে বেচাকেনা জমে ওঠেনি। বাজারে ক্রেতা নেই। ছোলার দাম আগের মত আছে। বলতে গেলে আগের চেয়ে কমেছে। আগে এসব ছোলার দাম আরও বেশি ছিল। বর্তমানে ছোলার যে দাম, আমদানি হওয়া ছোলা বাজারে ঢুকলে তা আরও কমে যাবে।’