স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট যেন গোনাহের কারণ না হয়
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অশ্লীলতায় লিপ্ত হওয়া, বিভিন্ন গুজব ও অপবাদ ছড়ানো, মানুষের গোপন দোষ সমাজে ছড়িয়ে দেওয়াসহ আরও বিভিন্ন গোনাহের কাজ আছে- যা গোপনে, সমাজের লোকজনের চোখের আড়ালে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই করা যায়।
বিশিষ্ট সাহাবি হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, একদা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমার উম্মতের এমন কিছু মানুষকে আমি জানি, যারা কিয়ামতের দিন তাহামা পর্বতের মতো সওয়াবের বিশাল স্তূপ নিয়ে উপস্থিত হবে।
কিন্তু আল্লাহতায়ালা তাদের এত বিশাল নেকির স্তূপকে ধুলিকণার মতো উড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন।
এ বর্ণনা শুনে অবাক হয়ে আমি নিবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! দয়া করে তাদের পরিচয় আমার কাছে খোলে বলুন। যেন, না জেনে, না বুঝে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে না পড়ি। তিনি ইরশাদ করলেন, ‘তারা তোমাদেরই সাথী-সঙ্গী, তোমাদেরই দলের লোক। তারা রাত জেগে তোমাদের মতো ইবাদতও করবে। কিন্তু যখন তারা নির্জনে সুযোগ পাবে তখন আল্লাহর নিষিদ্ধ হারামে লিপ্ত হবে। ’ -সুনানে ইবনে মাজাহ ৪২৪৫
ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের এ যুগে আলোচিত হাদিসে তাদের জন্য রয়েছে সতর্কবার্তা। বিশেষ করে যারা অফলাইনে দ্বীনদার, ধর্মপ্রাণ, পরহেজগার ও ধার্মিক হিসেবে পরিচিত তাদের জন্য।
আজ থেকে মাত্র এক দশক আগেও যখন ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন সহজলভ্য ছিল না- তখন নির্জনে গোনাহ করার সুযোগ ছিল খুব সীমিত। বলতে গেলে তেমন কোনো গোনাহের সুযোগই ছিল না। কিন্তু যখন ইন্টারনেট এসে গেল, সেই সঙ্গে হাতে হাতে স্মার্টফোন পৌঁছে গেল- তখন পরিস্থিতি হয়ে গেল অত্যন্ত ভয়াবহ ও জটিল। নির্জনে গোনাহ করার এত নিরাপদ সুযোগ আগের যুগের মানুষ কল্পনাও করতে পারত না। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন মিলে যে অত্যাধুনিক অন্তর্জাল যুগের সৃষ্টি করেছে এবং দ্বীনদার, পরহেজগার মানুষগুলোকে যেভাবে গোনাহের জালে আটকে ফেলেছে সম্ভবত এ যুগের আধুনিক ইসলামপন্থি দ্বীনদারদের লক্ষ্য করেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন আজ থেকে দেড় হাজার পূর্বে।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অশ্লীলতায় লিপ্ত হওয়া, বিভিন্ন গুজব ও অপবাদ ছড়ানো, মানুষের গোপন দোষ সমাজে ছড়িয়ে দেওয়াসহ আরও বিভিন্ন গোনাহের কাজ আছে- যা গোপনে, সমাজের লোকজনের চোখের আড়ালে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই করা যায়। আশপাশের মানুষ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারে না।
তাই যারা ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের উচিত- নির্জনে, নিরালায় আল্লাহতায়ালাকে ভয় করে, আখেরাতকে ভয় করে সতর্কতার সঙ্গে এগুলো ব্যবহার করা। অনৈতিক ও অশ্লীলতা পরিহার করা। নচেৎ ইন্টারনেটের গোপন গোনাহের কারণে নামাজ, রোজা, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার ও দান-খয়রাতসহ ফরজ-নফল থেকে শুরু করে সব নেক আমলের সওয়াব ধুলি-কণার মতো উড়ে নষ্ট হয়ে যাবে।