মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়তে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করতে ৪ থেকে ৪১ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশি ধনকুবেরদের পাচার করা এ টাকায় করা যেত আরেকটি পদ্মা সেতু। তবে এ নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিআইডি। আর দুদক বলছে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলেই কাজ শুরু করবে তারা।
দক্ষিণ চীন সাগর তীরের দেশ মালয়েশিয়ায় আছে ৩ হাজার ৬০৪ বাংলাদেশির সেকেন্ড হোম। সেখানে কনডোমিনিয়াম অ্যাপার্টমেন্ট, বা বাড়ি করেছেন তারা।
দেশটির ব্যাংকে ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ রিঙ্গিত ফিক্সড ডিপোজিট করলে নানা শর্তে মেলে সেকেন্ড হোম গড়ার সুযোগ।
ব্যক্তি পর্যায়ে কাউকে বিদেশে এমন লগ্নির সুযোগ দেয় না বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কীভাবে এই বিপুল অর্থ সেখানে নিয়ে সেকেন্ড হোম গড়লেন বাংলাদেশি?
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং, হুন্ডি এবং অনেকেই হয়ত ব্যাগ ভর্তি করে বিমানবন্দরে ফাঁকি দিয়ে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।’
মালয়েশিয়া মাই সেকেন্ড হোম-এমএম-টু-এইচ প্রজেক্টে তিন স্তর। সিলভার, গোল্ড, প্লাটিনাম। প্লাটিনামের জন্য বাংলাদেশিরা খরচ করেছেন ৫০ লাখ রিঙ্গিত। টাকার অঙ্কে যার পরিমান সাড়ে ১১ কোটি টাকা। চাইলে এর বেশিও বিনিয়োগ করতে পারে বাংলাদেশিরা। সেই টাকার অঙ্ক কত? তা কখনোই প্রকাশ করে না মালয়েশিয়া।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তারা কিন্তু শুধু মাত্র এই সেকেন্ড হোমের মালিকানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন নাই ব্যবসা বাণিজ্যটা। সেখানে কিন্তু সুযোগটা নিয়ে তারা অন্যভাবে বিনিয়োগ করেছেন। সম্পদের মালিকানা করেছেন। বিভিন্ন প্রফিট মেকিংয়ের মধ্যে জড়িত আছেন।’
অর্থপাচার নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ) বা সিআইডি সেকেন্ড হোম প্রশ্নে এখনই কিছু বলতে নারাজ।
২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় দ্বিতীয় নিবাসীর তালিকা নিয়ে কাজ শুরু করেছিল দুদক। তবে সে তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। সংস্থাটির আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘যারা সেকেন্ড হোম করেছে, টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে ওদের তথ্যটা না আসলে তো কমপ্লিট ইনকোয়েরি তো হবে না। সে জন্য সেই রিপ্লাইয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই) বলছে, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে পাচার হয় ৮০ হাজার কোটি টাকা।