চট্টগ্রাম

পঙ্গু মায়ের সেবায় রিকশার হাতল ধরেন স্বামী হারা মমতাজ

মমতাজ বেগম। বয়স চল্লিশের ঘরে। বিয়ের কিছুদিনের মাথায় হারিয়েছেন স্বামীকে। এরপর আর বিয়ে করেননি।

জীবন সঁপে দেন পঙ্গু মায়ের সেবায়। শুরুতে মায়ের চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে নামেন ফল ব্যবসায়। কিন্তু সেখানে লোকসানে পড়ায় রাস্তায় নেমে পড়েন অটো রিকশা নিয়ে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে জন্ম হলেও দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম শহরেই বসবাস করছেন মমতাজ বেগম। বর্তমানে তিনি নগরের কালামিয়া বাজার সংলগ্ন একটি কলোনিতে ভাড়া বাসায় থাকেন। পথঘাট চেনা থাকায় প্রতিদিন অটোরিকশায় যাত্রী পরিবহন করতে পারেন নগরের আনাচে-কানাচে।

রোববার (৭ এপ্রিল) এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তাঁর সংগ্রামী জীবন নিয়ে।

তিনি বলেন, আমার স্বামী গাড়ি চালাতেন। আমাদের সংসার সুখের ছিল। হঠাৎ করে তিনি মারা যান। তখন থেকে আমার মায়ের সঙ্গে আছি৷ মাও অসুস্থ। হাটতে পারেন না।

কার কাছে গিয়ে দাঁড়াবো কিংবা কার কাছে হাত পাতবো। তাই কালামিয়া বাজারে ভ্যান গাড়িতে করে ফল বিক্রি করতে শুরু করি। কিন্তু এ ব্যবসা করে সংসার মায়ের ঔষধ আর নিজের ভরণপোষণ, ঘর ভাড়া দিতে আমি হিমশিম খাচ্ছিলাম। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম অটো চালাবো। এখন মোটামুটি ভালো আছি সংসার চলছে। ভোরে অটো নিয়ে বের হয়ে দুপুরের দিকে মাকে খাবার খাওয়াতে আসি। সেই সুযোগে নিজেও একটু বিশ্রাম নিয়ে আবারও বের হই বিকেলে। রাত ১০টা পর্যন্ত গাড়ি চালাই।

তিনি আরও বলেন, একজন নারীকে অটোরিকশা চালাতে দেখে অনেক লোক হতবাক হন। আবার অনেকে কাজ করার সাহসও দেন। অটোরিকশা চালিয়ে দৈনিক ১৫০০-২০০০ টাকা আয় হয়। রিকশার মালিককে ৫০০ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকায় মায়ের চিকিৎসা আর দৈনিক খরচ মিটিয়ে কিছু টাকা হাতেও থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d