চকবাজার মোড়ে ইসলামিক মনুমেন্ট করবে চসিক
সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নের পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়াতে নগরের চকবাজার অলি খাঁ মোড়ে গোলচত্বর করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশন (চসিক)। অলি খাঁ মসজিদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গোলচত্বরটিতে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি ইসলামিক মনুমেন্ট (স্মৃতি চিহ্ন)। গোল চত্বরটির ব্যাস হবে ১৭ ফুট। ইসলামিক মনুমেন্টের উচ্চতা হবে প্রায় ২০ ফুট। গত সপ্তাহে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
চসিকের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, এ মোড়ে রয়েছে চারটি সড়কের সংযোগ। যেখান দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৬০০ এর অধিক যানবাহন চলাচল করে। গোলচত্বর না থাকায় সেখানে চালকরা এদিক সেদিক গাড়ি চালায়। এতে সৃষ্টি হয় যানজট। গোলচত্বর হলে তা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসের পাশাপাশি সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গোলচত্বর করা হচ্ছে। অলি খাঁ মসজিদ অনেক পুরনো মসজিদ। মসজিদটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গোলচত্বরটি করছি। গোলচত্বর হলে সেখানে যানজটও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
মেয়র বলেন, চকবাজার অনেক পুরনো এলাকা। টাউন বলতে যা বুঝায় একসময় চকবাজার তেমন ছিল। এ এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন করে এর ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছি। চকবাজার ছাড়াও শহরের অন্যান্য মোড়েও ১০টি নান্দনিক গোলচত্বর নির্মাণ করা হবে।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গোলচত্বরে নির্মাণাধীন ইসলামিক মনুমেন্ট এর কাঠামোর উপরে একটি গম্বুজ থাকবে। গম্বুজের নিচে কালেমার বা ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফী করা হবে। এর নিচে কাঠামোর চতুর্দিক হবে এরাবিয়ান ডিজাইনের। গোলচত্বর এবং ইসলামিক মনুমেন্টে পর্যাপ্ত লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হবে। গোল চত্বরের পাশাপাশি সড়কের ল্যান্ড মার্কিং ও ট্রাফিক সিগন্যাল এর ব্যবস্থা করা হবে। আগামী চারমাসের মধ্যে পুরো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গোলচত্বরটির নকশা প্রণয়ন করেছেন শিল্পী ও পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক ডিন মো. ইউনুছ। তিনি বলেন, সেখানে চকবাজার অলি খাঁ মসজিদ আছে, এটা ধর্মীয় ব্যাপার এবং পূত পবিত্র। সে কারণে ইসলামিক মনুমেন্ট এর ডিজাইন করেছি। এলাকার লোকজনও সেটা পছন্দ করেছেন। মনুমেন্টের উপরে গম্বুজ থাকবে এবং এর নিচে কাঠামোর চতুর্দিকে আর্চ–এর মত ডিজাইন করা হয়েছে। যেটা সাধারণত বিভিন্ন মসজিদে দেখা যায়। তিনি বলেন, যেখানে যে পরিবেশ তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে মনুমেন্ট (স্মৃতিচিহ্ন) বা স্কাপচার (ভার্স্কয) করতে হয়। সেই হিসেবে এখানে ইসলামি মনুমেন্টটা করা।
এ শিল্পী বলেন, গোলচত্বর হয়ে গেলে জায়গাটি দিয়ে যেসব যানবাহন চলাচল করে সেখানেও শৃঙ্খলা চলে আসবে। আগে তো সবাই উল্টাপাল্টা যেত, এখন ডিসিপ্লিনে পড়ছে সেটা।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, আড়াই হাজার কোটি টাকার ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কসমূহ উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চকবাজারের গোলচত্বরটি করা হচ্ছে। অবশ্য এ প্রকল্পে চার কোটি টাকায় নয়াবাজার মোড়, সাগরিকা, অলংকার, সল্টগোলা ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং, কাঠগড়, চকবাজার, অঙিজেন এবং বহদ্দারহাটে ১০টি গোলচত্বর করার বরাদ্দ আছে। তবে চাহিদার ভিত্তিতে গোলচত্বরের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১৭ থেকে ১৮টি গোলচত্বর করার পরিকল্পনা আছে চসিকের প্রকৌশল বিভাগের। এক্ষেত্রে গোলচত্বরগুলোর শোভাবর্ধন করা হবে। চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি প্রাধান্য পাবে এখানে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গোলচত্বর যেভাবে সাজায় সেগুলোও বিবেচনা করা হবে।