ধর্ম

এলাকায় একাধিক মসজিদ থাকলে নামাজ পড়বেন কোনটিতে?

বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের বাসস্থান, ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়াদীও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের সুশৃঙ্খল ইবাদতের জন্য একই এলাকায় একাধিক মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে।

জনসংখ্যা বহুল এলাকাগুলোতে পাশাপাশি দুই বা একাধিক মসজিদও দেখা যায়।

কোনো এলাকায় একাধিক মসজিদ নিমার্ণ হলে মুসল্লিদের উচিত নিজের মহল্লার নিকস্থ মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া। যেটা তার বাসস্থানের আশেপাশে।

একই এলাকার অন্য মসজিদ বা কিছুটা দূরের মসজিদে না গিয়ে কাছের মসজিদে নামাজ পড়াই উত্তম। কারণ, এটি তার মহল্লার মসজিদ। আর মহল্লার মসজিদ আবাদ করা, এতে ইবাদতের পরিবেশ চালু রাখা মহল্লাবাসীর দায়িত্ব।

তাই মহল্লাবাসীর উচিত নিজে সেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া। এবং আশপাশের লোকজনকেও সেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে উদ্বুদ্ধ করা।

তবে কখনো বা দৈনিক কোনো প্রয়োজনে বা ইচ্ছা করলে নিজ মহল্লার মসজিদ ছাড়া পাশের অন্য মসজিদেও নামাজ আদায় করতে পারবেন। কিন্তু নিকটস্থ মসজিদ ছেড়ে সেই মসজিদে স্থায়ীভাবে নামাজ পড়া শরীয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়।

(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৮; শরহুল মুনইয়া ৬১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৬৭; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৯)

মসজিদ নির্মাণ অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। মসজিদ নিমার্ণকারীর জন্য আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে ঘর নিমার্ণ করবেন বলে হাদিসে জানানো হয়েছে।

এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৫০)

মসজিদ নির্মাণ এমন একটি পুণ্যময় কাজ, যার সওয়াব মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে। যত দিন সেই মসজিদে আল্লাহর ইবাদত হবে, তত দিন নির্মাণকারী এর সওয়াব পেতে থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সাত ধরনের আমলের প্রতিদান মৃত্যুর পর কবরেও জারি থাকে। ১. যে ব্যক্তি কাউকে দ্বিনি ইলম শিক্ষা দেবে। ২. যে নদী প্রবাহিত করতে সহযোগিতা করবে। ৩. অথবা কূপ খনন করবে। ৪. অথবা গাছ রোপণ করবে। ৫. অথবা মসজিদ নির্মাণ করবে। ৬. অথবা কোরআন বিতরণ করবে। ৭. অথবা সুসন্তান রেখে যাবে যে তার মৃত্যুর পর তার জন্য দোয়া করবে। (আল বাহরুজ জাখখার : ১৩/৪৮৪)

মসজিদ নির্মাণ করতে হবে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। মসজিদ নিয়ে অহংকার করা কিয়ামতের আলামত।

এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, লোকেরা মসজিদ নিয়ে পরস্পর গৌরব ও অহংকারে মেতে না উঠা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৪৯)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d