ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ২ প্রার্থীর ভোট বর্জন
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন। একইসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলও ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
বুধবার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে এ দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী যৌথভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এসময় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আনারস মার্কার গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার ছেলে তাসিক মির্জা ও ভাগনেরা আমার কর্মী ও এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। তারা সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে সিল মেরে সব ভোট কমপ্লিট করেছেন। মেয়র নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট মারার অর্ডার দিয়ে নিজে ভোট মেরেছেন। গতরাতে আমার সমর্থকদের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর, বোমাবাজি করেছে, সমর্থকদের কুপিয়ে জখম করেছেন। যার কারণে অনেক এলাকায় আমার কর্মী ও এজেন্টরা বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। প্রশাসনকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট বাতিল ও পুনরায় তফসিল ঘোষণা করার আবেদন জানাচ্ছি।
অপরদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, এখানে ভোটের পরিবেশ আগেও ছিল না। আমরা স্বাধীনভাবে কোনো মত প্রকাশ করতে পারি নাই, ভোট চাইতে পারি নাই। ভোটারদের কাছে যেতে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাই নাই। সকালে আমার এজেন্ট যারা কেন্দ্রে গিয়েছে, তাদের এজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলেছে, টেবিল ভেঙে প্রত্যেককে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এখন ওপেন সিল মারছে তারা। ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সময় তাদের কুপিয়ে ও মাথা ফাটিয়ে নৌকার মধ্যে ফেলে রেখেছে। তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে পারছে না। কিছু কিছু কেন্দ্রে পুলিশ আমাদের ভোটারদের পিটাইতেছে। এ অবস্থায় আমরা এ ভোট মেনে নিতে পারি না, এভাবে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের মান সম্মানে আঘাত করা হয়েছে। ওনার উপজেলায় সারারাত বোমাবাজি করা হয়েছে, মানুষকে জখম করা হয়েছে, মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ওনার ভাতিজা তাসিক ও ভাগিনা রাহাতের নেতৃত্বে ১০-১৫টি অনুমোদনহীন গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। তাই আমি মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, এ ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ফোনে কল দেওয়া হলে এক ব্যক্তি রিসিভ করে বলেন, মেয়র মহোদয় ব্যস্ত আছেন, এখন কথা বলবেন না।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি নিজেই কোম্পানীগঞ্জে আছি। কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের এজেন্টদেরও পেয়েছি। কোথায় কোন কেন্দ্রে সমস্যা, সে অভিযোগ আমাকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।