জাতীয়

এনআইডি ঠিকানা পরিবর্তনে সীমা নির্ধারণ, ফি আরোপের ভাবনা

একজন ব্যক্তি কতবার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন, তা নিয়ে কোনো আইনি কাঠামো না থাকার সুযোগে অনেকে বারবার ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন করেন। এছাড়া এতে কোনো ফিও নেওয়া হয় না। তাই এই সুযোগ আর না দেওয়ার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যমান পদ্ধতি অনুসারে ভোটার স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কতবার পর্যন্ত স্থানান্তর করা যাবে সে বিষয়ে কোনো সীমারেখা নেই। এছাড়া স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কোন ফি/চার্জ প্রযোজ্য নয়।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে এক স্থান থেকে একবার স্থানান্তরের পর নির্বাচন শেষে পুনরায় পূর্বের স্থানে স্থানান্তরেরও প্রবণতা দেখা যায়। পক্ষান্তরে স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচনসমূহে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এছাড়া কতিপয় ক্ষেত্রে স্থানান্তরের জন্য ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে সশরীরে উপস্থিতির বিধান থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে বিরত রাখার অসৎ উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর অগোচরেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে সিস্টেমের অপব্যবহার করে ভিন্ন নির্বাচন এলাকাতে স্থানান্তরের বিষয়ও পরিলক্ষিত হয়।

ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য বর্তমানে ৩৮ হাজারের মতো আবেদন জমে আছে। তবে এগুলো উপজেলা নির্বাচনের কারণে নিষ্পত্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি।

বৈঠকে ওই সব আলোচনার পর কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান এলাকা পরিবর্তনের সীমা নির্ধারণ ও ফি আরোপের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। একই সঙ্গে তা অনুমোদনের জন্য কমিশন বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন।

লিখিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্থানান্তর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কার্যপত্র প্রস্তুতপূর্বক কমিশনে উপস্থাপন করতে হবে-

সর্বোচ্চ কতবার স্থানান্তর করা যাবে; এক স্থান হতে একবার স্থানান্তরের পর পুনরায় পূর্বের স্থানে স্থানান্তরের সুযোগ প্রদান সমীচীন হবে কিনা। এবং যদি করা হয় তাহলে স্থানান্তরিত এলাকার ঠিকানায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এনআইডিতে কোনো সংশোধন করা যাবে না মর্মে কোনো শর্ত প্রদান করা যায় কিনা; একবার স্থানান্তরের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার স্থানান্তরের ক্ষেত্রে যথাক্রমে জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হতে প্রত্যয়ন নেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দলিলাদির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা; স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অন্যান্য এনআইডি সেবার ন্যায় ফি/চার্জ নির্ধারণ করা যায় কিনা ইত্যাদি।

এছাড়া সর্বোপরি আবেদনকালে সংশ্লিষ্ট অফিসে ব্যক্তির উপস্থিতি সাপেক্ষে তার আঙুলের ছাপ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। সংশোধন কার্যক্রমের অনুরূপ ভোটার স্থানান্তর এবং নতুন ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে।

উল্লেখ্য, এনআইডিতে দুই ধরনের ঠিকানা উল্লেখ করতে হয়। স্থানী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা। আর বর্তমান ঠিকানাই হচ্ছে ভোটার এলাকা। চাকরি, কর্মস্থল বা পড়ালেখার কারণে অনেকের বর্তমান ঠিকানাই স্থায়ী ঠিকানা থেকে আলাদা হয়। পরবর্তীতে অনেকেরই যা পরিবর্তন করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d