নারী, আদিবাসীসহ প্রান্তিক মানুষের জন্য দ্বিগুণ বরাদ্দের দাবি
গ্রামীণ নারী ও আদিবাসীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজনের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ করার দাবি জানিয়েছে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিচার্স সেন্টার (এইচডিআরসি) এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এলআরডি)।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপে ‘বাজেট প্রক্রিয়া ও উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ এবং বাজেটে তাদের ন্যায্য বরাদ্দ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব দাবি তুলে ধরেন বক্তারা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এইচডিআরসির প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘নারী কৃষকদের স্বীকৃতি দিয়ে তা কার্যকরে বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া জরুরি। কৃষিক্ষেত্রে গৃহীত প্রকল্পগুলোয় নারীর জন্য কোটা রাখতে হবে। মাথাপিছু বাজেট বরাদ্দ এখনকার তুলনায় কমপক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা জরুরি। সেই সঙ্গে নারী-কৃষক, নারী কৃষি-শ্রমিক এবং প্রান্তিক গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা খুঁজে বের করা, তাদের পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সৃজনের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য বাজেটীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, “জাতিসংঘ ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল সময়কালকে পারিবারিক কৃষি দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ পারিবারিক কৃষি বিষয়টি আমাদের দেশে স্বীকৃতি নয়। বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে পারিবারিক কৃষি খাতের সমস্যাগুলো অনেক বেশি প্রকট এ যেন হাত কাটা খেয়ে কোনোভাবে টিকে থাকার জন্য পরিচালিত কৃষি ব্যবস্থা। জাতীয় বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ কত তার কোনো ‘দাপ্তরিক’ হিসাব নেই। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ ৪০ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা—যা মোট বাজেটের ৫.৩ শতাংশ। তাই পারিবারিক কৃষিকে স্বীকৃতি দিয়ে এই বাজেট দ্বিগুণ করা জরুরি।”
বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দাবি জানিয়ে এলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ জন্য বাজেটে বরাদ্দ থাকে না। আদিবাসীদের জন্য করা ভূমি কমিশনের জন্যও বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তাই আদিবাসীদের ভূমি সংকট নিরসন ও জীবন মান উন্নয়নে নির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন।’
ভূমি সংস্কারের সমালোচনা করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ড. জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘একজন দুজনকে ধনী বানিয়ে ২০ কোটি লোককে গরিব বানানোর বাজেট দিয়ে দেশের উন্নয়ন হয় না। গ্রামে ভূমি সংস্কারের নামে বরাদ্দ হয়। কিন্তু ক্ষমতাবানরা ভূমি দখল করে। গরিবরা ও ভূমিহীনরা খাস জমি পায় না। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া ভূমি সংস্কার সম্ভব হবে না।’