মৌসুমেও ওমরা যাত্রী কমে অর্ধেক
চট্টগ্রামে হজ ও ওমরা যাত্রী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আল নূর হজ কাফেলা। মাস চারেক আগেও প্রতিষ্ঠানটির সহযোগিতায় সৌদি আরবে ওমরা পালন করতে যান পঞ্চাশের অধিক যাত্রী। কিন্তু গত মাসে একই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওমরা পালন করতে গিয়েছেন মাত্র ২৮ জন।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী শরিয়াত উল্লাহ শহিদ বলেন, চলতি মাসে এ সংখ্যা আরও কমেছে। অথচ গত বছরের এই সময়ে ওমরা যাত্রীদের চাপ থাকতো কয়েকগুণ বেশি। কিন্তু হঠাৎ ওমরা যাত্রী কমে গেছে।
ট্রাভেল ব্যবসার পাশাপাশি ওমরা যাত্রীদের সেবা দেন জেড আই ট্রাভেল্স। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, মাসে অন্তত ১০ জন যাত্রী পাওয়া যেত। কিন্তু এ কয়েক মাস একজন যাত্রীও পাওয়া যায়নি।
শুধু এ দুই প্রতিষ্ঠানের চিত্র এমন নয়। চট্টগ্রামের একাধিক হজ ও ওমরা যাত্রী সেবাদানকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ ওমরা যাত্রী কমেছে। অথচ কোরবান ঈদের পর থেকে বছরের শেষ সময় পর্যন্ত ওমরা হজের মৌসুম। কিন্তু এ মৌসুমেও ধস নেমেছে ওমরায়। এ জন্য দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং বাড়তি খরচের পাশাপাশি মানুষের অর্থ সংকটের বিষয়টিও দেখছেন কেউ কেউ।
চট্টগ্রামের আরেক ওমরা ও হজ যাত্রী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান শাহ আমানত হজ কাফেলা। বর্তমান সময়ে ওমরা যাত্রীর পরিস্থিতির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, ‘গত বছরের এই সময়ে ওমরা যাত্রীদের চাপ ছিল কয়েকগুণ। বলতে গেলে বর্তমানে এজেন্সিগুলো হাত-পা গুটিয়ে ফেলেছে। অন্তত ৫০ শতাংশ যাত্রী কমেছে।’
এজেন্সিগুলো জানায়, গত বছর এই সময়ে ওমরা যাত্রীদের চাপ ছিল কয়েকগুণ। এ জন্য টিকিট পাওয়া ছিল কঠিন। পাশাপাশি বিমান ভাড়াও বেশি ছিল। যদিও গত সপ্তাহে ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বিমানের টিকিটের মূল্য কিছুটা কমিয়ে আনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া যাত্রীদের টিকিট প্রাপ্তি সহজলভ্য করা হয়। কিন্তু ভাড়া কমানোর পরও সে তুলনায় যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম ডিস্ট্রিক ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিমান ভাড়া কমানো হলেও তুলনামূলক যাত্রী কম পাওয়া যাচ্ছে। এই সময়ে ওমরাহ যাত্রী বেশি থাকে, কিন্তু তুলনামূলক বিমানে যাত্রী সংকট।
আল-রাফি ওমরা ও হজ কাফেলার স্বত্বাধিকারী এইচএম মুজিবুল হক শাকুর বলেন, একটা সময় যাত্রীর চাপ ছিল কয়েকগুণ বেশি। যার কারণে টিকিটের মূল্যও বেশি থাকতো। অথচ বর্তমানে টিকেটের মূল্য কিছু কমিয়েছে, এরপরও ওমরায় আগ্রহ নেই। যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় ৫০ শতাংশ যাত্রী নেই। অতীতে এমন চিত্র দেখা যায়নি।
সার্বিক বিষয়ে হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) চট্টগ্রাম জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বিমান ভাড়া কমেছে ঠিক। তবে সে তুলনায় যাত্রী নেই। তাছাড়া চট্টগ্রামসহ আশেপাশে বহু জেলা এখন বন্যা কবলিত। মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর্থিক সংকট ও সার্বিক পরিস্থিতির কারণে মানুষের আগ্রহ কম। তবে আশা করছি সামনে এ পরিস্থিতি ঠিক হবে।