ভারতে রপ্তানির খবরে ইলিশের দাম আরও চড়া
বরিশালের বাজারগুলোতে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের মতো এবারো ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ যাওয়ার খবরের প্রভাব বাজারে পড়েছে।
তবে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার চেয়ে আমদানি কম থাকায় ইলিশের দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী।
আর পাইকারদের দাবি, শুধু রপ্তানিযোগ্য আকারের ইলিশের দামে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। সচরাচর দেশের ক্রেতাদের যে আকারের ইলিশের প্রতি আকর্ষণ থাকে, তাতে তেমন একটা দামের তারতম্য হয়নি এখনো।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বরিশাল নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের মতোই দেখা যায়। তবে ইলিশের দাম শুনে হতাশ ক্রেতারা।
জিয়াউল করিম নামে এক ক্রেতা বলেন, এ সময়ে বাজারে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়, ফলে দাম কিছুটা কম থাকায় পরিবারের সবাইকে পর্যাপ্ত জাতীয় মাছ ইলিশ খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আর সন্তানরাও ইলিশ মাছ খুব পছন্দ করে। তবে রপ্তানির ঘোষণার পরই বাজার ঘুরেছে মনে হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে এখন এলসি আকারের ইলিশের দাম বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে ছোট ইলিশ খুঁজছি।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, ভারতে ইলিশ রপ্তানির প্রজ্ঞাপন জারির পর বরিশালে ইলিশের দাম মণপ্রতি কিছুটা বেড়েছে। ছোট ইলিশ যা আগে ছিল ১০ হাজার টাকা মণ, তা এখন ১২ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
আর ৫৩ হাজারের এলসি (৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের) আকারের ইলিশের মণ ৬২ হাজার টাকা। এ ছাড়া কেজি আকারের মাছের মণ ৬৮ হাজার টাকা, এক হাজার ২০০ গ্রাম ওজনের মাছ ৭৬ হাজার টাকা, ভ্যালকা (৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম) আকারের মাছ ৫২ হাজার টাকা, ২৭ হাজার টাকার জাটকা ৩৫ হাজার টাকা। ।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার নাছির উদ্দিন জানান, এমনিতেই বাজারে ইলিশের আমদানি নেই তেমন। তার মধ্যে রপ্তানির খবরে সব জায়গায় সিন্ডিকেট শুরু হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। যারা রপ্তানি করতে পারবে, তারা সিন্ডিকেট করে মাছ নিয়ে যাচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারণে ইলিশের দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না, তা কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবে না। বড় আকারের কোনো ইলিশই নেই। এ সময়ে যেখানে ৮০০ থেকে হাজার মণ ইলিশ এ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসত, সেখানে বর্তমানে ইলিশ আসছে সর্বোচ্চ দেড়শ মণ।
ইলিশ কিনতে এসে ফিরে যাওয়া আছিয়া বলেন, ইলিশের বদলে রুই মাছ কিনে নিয়ে গেলাম। যা দাম, তাতে ইলিশ আমাদের নয়, উচ্চবিত্তদের মাছ হয়ে যাচ্ছে।
বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইয়ার উদ্দিন বলেন, জাটকার আমদানি বেশি, ভালো আকারের তেমন কোনো ইলিশ নেই বাজারে। কিন্তু ৭০০ গ্রামের নিচে তো মাছ রপ্তানিতে পাঠানো যাবে না। আর নদীতে জাটকা ধরা পড়ছে বেশি। আর ভারতে যাবে, সেই মাছেরও দাম বেড়েছে।