চট্টগ্রামনগরজুড়ে

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার নাটক সাজিয়ে ছয় লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার নাটক সাজিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টা রুখে দিয়েছে পুলিশ।

শনিবার ( ৭ অক্টোবর) বিকেলে পাহাড়তলী এলাকা থেকে অভিযুক্ত কর্মচারী আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী।

গ্রেপ্তার আব্দুর রহিম নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন চরমজিদ গ্রামের বাসিন্দা।

ওসি ফজলুল কাদের পাটোয়ারী জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে রাকিব ফিশ নামের প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী আবদুর রহিম প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. ইউসুফের নির্দেশে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পাহাড়তলী শাখা হতে চেকমূলে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে। তারপর প্রতিষ্ঠানের পাওনা হিসেবে পাহাড়তলী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মনিরের মাছ দোকান হতে ৬০ হাজার ৩০০ টাকা বুঝে নেয়। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ সে ফিরে না যাওয়ায় মো. ইউসুফ থানায় উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানায়। কিছুক্ষণ পরে মো. ইউসুফ জানতে পারেন আবদুর রহিমকে সীতাকুণ্ড থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালুশাহ্ মাজারগেটের কাছে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরে তিনি লোকজন নিয়ে রাত ১১ টার সময় কালুশাহ্ মাজার গেটের কাছে গিয়ে সড়কে অজ্ঞান অবস্থায় পায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে ২ দিন চিকিৎসাধীন থাকায় পুলিশ ঘটনার বিষয়ে ঠিক কি ঘটেছিল স্পষ্ট কোন তথ্য পাচ্ছিল না।

ওসি জানান, এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইমান হোসেন পাহাড়তলী বাজার ও আশপাশের সড়কে সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করে, কিন্তু ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোন সিসিটিভি ফুটেজ পেতে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে এসআই ইমান হোসেন ডবলমুরিং থানা এলাকার গন্ডি পেরিয়ে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের সামনের একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। যে ফুটেজে দেখা যাচ্ছে আবদুর রহিম ঘটনার দিন বিকেল ৫ টার পর শপিং ব্যাগে করে টাকা নিয়ে সুস্হ স্বাভাবিকভাবেই পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছে। আবদুর রহিম হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেয়ার পর তাকে উক্ত সিসিটিভি ফুটে দেখালে সে জানায়, পাহাড়তলী বাজার থেকে টাকা নিয়ে ১০ নং ম্যক্সিমা লেগুনা গাড়িতে উঠে পাহাড়তলীর অলংকার মোড়ের আগে নামে। সে জানায় অলংকার মোড়ের আগে নামার পর কি হয়েছে সে কিছু বলতে পারে না।

ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রহিমকে সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে জেরা করলে সে স্বীকার করে ঘটনার দিন বিকাল ৫ টার পর সে উক্ত টাকা নিয়ে অলঙ্কার মোড় থেকে বাসযোগে নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন তার নিজ বাড়িতে টাকাগুলো রেখে ঐদিনই চট্টগ্রামে ফিরে এসে সীতাকুণ্ড থানাধীন কালুশাহ মাজারের কাছে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে শুয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন তাকে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাদের ইউসুফ সাহেবের নাম্বার দিলে তারা ইউসুফ সাহেবকে কল করে বিষয়টি জানান। এরই প্রেক্ষিতে তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে আবদুর রহিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। রহিমের দেখানো মতে তার বাড়ি থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হলে অবশিষ্ট টাকা সে খরচ করে ফেলেছে বলে জানায়। তাকে আজ রবিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d