অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও নিয়ে ‘ব্লাকমেইল’ করায় সাবেক স্ত্রীকে হত্যা
যশোর: বিচ্ছেদের পর ‘ব্লাকমেইল’ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে সাবেক স্ত্রীকে হত্যা করেছেন মৃন্ময় ভদ্র নামের এক ব্যক্তি। হত্যার অভিযোগে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
যশোর সদর উপজেলার মঠবাড়ী গ্রামে বুকভরা বাঁওড়ের পাড় থেকে শাড়ি পরা ওই নারীর মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এদিকে মরদেহের পাশ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ফোনের সূত্র ধরে নিহত নারীর পরিচয় ও অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত খাদিজা খাতুন ওরফে মিতু কর্মকার সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া কৃষ্ণনগর গ্রামের আজগর আলী সরদারের মেয়ে। বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হয়ে মিতু কর্মকার নাম রাখেন তিনি। আটক মৃন্ময় ভদ্র যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের মদন কুমার ভদ্রের ছেলে। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দামোদরকাঠি গ্রামে বসবাস করেন।
হত্যার রহস্য উদঘাটন করে বুধবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিং করেন যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রূপণ কুমার সরকার।
তিনি জানান, খাজিদার জীবনযাপন উচ্ছৃঙ্খল। সে নিয়মিত মাদকসেবন করে। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার মাদক মামলাসহ দুটি মামলা রয়েছে তার নামে। খাদিজা বছর দুয়েক আগে একটি হিন্দুধর্মের ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এর পর খাদিজা মুসলিম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। এর পর সে খাদিজা থেকে মিতু কর্মকর হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে সেই সংসারে বিচ্ছেদ হয়। এরপর সাতক্ষীরায় একটি নাচের অনুষ্ঠানে পরিচয় ঘটে সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের মৃন্ময় ভন্দ্রের সঙ্গে। দীর্ঘ প্রেমের পর তারা বিয়ে করে।
বছর খানিক আগে মিতু ও মৃন্ময়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তারপরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকাকালীন মিতু ও মৃন্ময়ের মধ্যে অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিতো মিতু। নানা সময়ে প্রতারিত হয়ে মৃন্ময় মঙ্গলবার সাতক্ষীরা থেকে মিতুকে নিয়ে যশোরের বুকভরা বাঁওড়ে নিয়ে যায়। সেখানে মিতুকে মাদকসেবন করিয়ে রাত ১১টার দিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাঁওড় পাড়ে একটি ধান ক্ষেতে লাশ ফেলে পালিয়ে যান মৃন্ময়। মরদেহের পাশে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে মৃন্ময়কে তার এক চাচার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।