আগুনের হোতা যুবদল নেতা নয়নকে খুঁজছে পুলিশ
গাড়িতে আগুন দেয়ার একাধিক ঘটনায় রবিউল ইসলাম নয়ন নামের এক তরুণকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তিনি ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব। মিলেছে গান পাউডার ব্যবহারের আলামত। পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনায়ও জড়িত ছিলো বিএনপি কর্মীরা। ভিডিও ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করেছে পুলিশ।
গেলো ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয় । এদিন কাকরাইল, শান্তিনগর, বিজয় নগর ও নয়াপল্টনে ভাঙচুর গাড়ি পোড়ানো ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ‘প্রেস’ লেখা লাইফ জ্যাকেট পরা এক যুবককে দেখা গেছে।
ভিডিও বিশ্লেষণ করে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তার নাম রবিউল ইসলাম নয়ন। তিনি তিনি যুবদল ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব । এর আগে ২০১৩ ও ১৪ সালে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। বাসে আগুন দেয়ার সময় নয়নের গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছিল, যেখানে ‘প্রেস’ লেখা ছিল এবং হাতে লাঠি ছিলো বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ভেস্ট পরে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধান শুরু করে। গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষের ফুটেজ বিশ্লেষণের পর নিশ্চিত হয়েছি, বাসে আগুন দেওয়া যুবক যুবদলের ঢাকা দক্ষিণের সদস্য। গত শনিবার কাকরাইল অঞ্চলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রবিউল ইসলাম নয়নকে শনাক্ত করা হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ২০১৩-১৪ সালে সহিংসতার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। কাকরাইলে প্রেস লেখা ভেস্ট পরে গাড়িতে আগুন দেয়া ব্যক্তিও তিনি। এর আগে ২০১৩-১৪ সালেও বাসে আগুন দেয়ার একাধিক ঘটনায় নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। নয়ন মাগুরা থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকায় এসে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পর্যায়ক্রমে তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। নয়নকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারের পর বিস্তারিত আরও জানা যাবে।
মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান জানান, পুলিশ কনস্টেবল পারভেজকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সব আসামিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। সেদিন পারভেজের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারীরা। এরইমধ্যে সেই ঘটনায় শামীম রেজা ও মো. সুলতান নামের দুই বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকে অভিযান চলছে।
সেদিন সংঘর্ষের সূচনা হয় কাকরাইল থেকে। সেখানে দুইটি পিকআপ ও বৈশাখী পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রদল এবং যুবদলের কর্মীদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এদেরই একটি দলের হোতা বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালায়। গেট ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে।
এছাড়া রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালের সামনে থাকা আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সসহ ২৬টি গাড়িতে আগুন, হাসপাতালের দরজা জ্বালানা ভাঙচুর, আইডিইবি ভবনের গাড়িতে আগুন দেয়া ও মতিঝিল রেলওয়ে অফিসার্স কলোনির সামনে থেকে পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নেয়ার ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে বিএনপি জামায়াত কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। যানবাহনে আগুনের ঘটনায় মিলেছে গান পাউডার ব্যবহারের অস্তিত্ব।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, পূর্ব পরিকল্পনা মতোই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে এসব তাণ্ডব চালানো হয়।