চট্টগ্রাম

আনোয়ারায় ঝুঁকিতে সাড়ে চার কিলোমিটার বাঁধ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদের জোয়ারার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আনোয়ারা উপকূলীয় রায়পুর ও জুঁইদন্ডি ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বাধের বেহাল অবস্থা। এতে যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা উপকূলজুড়ে।

বর্তমানে মধ্যগহিরার বাগ্যার ঘাট এলাকার বাঁধটি স্থানীয়রা মেরামত করে রক্ষার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া গত দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১১ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জড়ো হাওয়ায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতবিহীন আনোয়ারায় মোবাইল নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থাও অনেকটা ভেঙে পড়েছে। গতকাল রাতে উপজেলাসহ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সচল করা গেলেও অধিকাংশ গ্রাম এখনো অন্ধকারে বলে জানা গেছে। উপজেলার ব্যস্ততম বাজার চাতরি চৌমহনী বাজার ও আনোয়ারা ডাকবাংলো সড়কে হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহালেও দেখার কেউ নেই। তাছাড়া বটতলী রুস্তমহাটেও কাদা পানিতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।

এদিকে আনোয়ারার উপকূল রক্ষায় ২০১৮ সালে ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উন্নয়নে ৫’শ ৭৭ কোটি টাকার প্রকল্প চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হবে। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ উপকূলে বসবাসকারী মানুষের জানমাল রক্ষায় যে ধরনের টেকসই বেড়িবাঁধ স্থানীয়রা দাবি করেছিল সে ধরনের টেকসই বাঁধ নির্মিত হয়নি। যার কারনে উপকূলবাসীর মাঝে রয়েছে চরম হতাশা। এখনো উপকূলীয় রায়পুর, জুঁইদন্ডি বরুমচড়া, রারখাইন, হাইলধর, পরৈকোড়ায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ণ আছে।

স্থানীয় রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও আনোয়ারা উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফোরকানের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা (এসও) উপসহকারী কর্মকর্তা অসহযোগিতায় বাইগ্যারঘাট এলাকার বেঁধিবাধে জিও ব্যাগ বসানো হয়নি। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারে পানি বেড়ে যাওয়ায় যে কোন মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে পুরো এলাকা প্রাবিত হওযার আশংকা। বর্তমানে স্থানীয়রা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে প্রায় ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে মাত্র ২ কিলোমিটার এলাকায় ব্লক বসানো হয়েছে। এতে এ ইউনিয়নের রব্বাত মিয়াজির বাড়ি থেকে হাজিবাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, একই সাথে মাঝির ঘাট থেকে পূর্ব জুঁইদন্ডী ঘাট ও পেঠান মাঝির বাড়ি এলাকার দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও বানুর হাট থেকে গোদারপাড় এলাকায় বসতঘর ও বাঁধে ঝুঁকিতে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কগকাল আনোয়ারার উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ পরিদর্শন করেছে। আনোয়ারায় সাগর উপকূলেদুই কিলো ৮’শ মিটার আর নদী উপকূলে সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি অর্থবছরে নতুন প্রকল্পের আওতায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হবে।

আনোয়ারা পল্লীবিদ্যুতের ডিজিএম জসীম উদদীন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার কারনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিদ্যুত বন্ধ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d