কক্সবাজার

আবারও সেন্টমার্টিনগামী স্পিডবোটে মিয়ানমার থেকে গুলি

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে রোগীবাহী স্পিডবোট লক্ষ্য করে আবারও গুলির ঘটনা ঘটেছে। টানা ৭ দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় শাহপরীর দ্বীপ ঘোলাচর এলাকার বাংলাদেশের জলসীমায় এ ঘটনা ঘটে।

তবে এতে হতাহত না হলেও দ্বীপজুড়ে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে দ্বীপে চলছে খাদ্য সংকটও।

মঙ্গলবার গুলি করা স্পিডবোটের মালিক সেন্টমার্টিনদ্বীপ স্পিটবোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি ও দ্বীপ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম।

তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য জরুরি টেকনাফে আসা পাঁচজন যাত্রীর সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রয়োজন হলে চালক মোহাম্মদ বেলাল সকাল সাড়ে ১০টায় টেকনাফের কায়ুকখালী ঘাট থেকে যাত্রা দেয়। বোটটি শাহপরীরদ্বীপ অতিক্রম করে নাফ নদীর বদরমোকামের গোলগরা পয়েন্টে পৌঁছে। এটি নাইক্ষ্যংদিয়ার বিপরীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের অংশ এলাকাটি। কিন্তু এরপরও মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে ট্রলারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা বাংলাদেশের জলসীমায় এগিয়ে এসে গুলি করে। টানা ১০-১২ রাউন্ডগুলি করা হয়। চালক বেলাল অবস্থা বুঝে স্পিডবোট দ্রুত চালিয়ে পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। বোটটি দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে গিয়ে পৌঁছে।

তিনি আরও বলেন, কাঠের ট্রলার বা সার্ভিস বোটে যাত্রী বা পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জটিলতা রয়েছে। ট্রলারগুলিকে নাফনদী এবং বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে এসে মিয়ানমারের কাছাকাছি এলাকা অতিক্রম করতে হয়। এটা করতে গিয়ে ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমার থেকে। এতে ট্রলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হননি। এরপর ৮ জুন শনিবারও পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলি করে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে গুলি লাগে সাতটি।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাটি নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা কারা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তারা ট্রলারে অস্ত্র হাতে নাফ নদীতে টহল দিচ্ছে। তারা সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার বা স্পীড বোট দেখলেই গুলি করছে। মঙ্গলবারের ঘটনার পর দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেন্টমাটিন-টেকনাফ যাত্রী ও পণ্যবাহী সব নৌযান চলাচল বন্ধ। যার কারণে দৈনন্দিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সংকট চলছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, তৃতীয়বারের মতো গুলিবর্ষণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বীপে অবস্থানরত মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। ওই এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মিয়ানমার থেকে ট্রলার ও স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে বার বার গুলি ছোড়ার ঘটনায় ওই নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীরদ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া বিষয়ে গত রবিবার ৯ জুন জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে অবহিত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d