আন্তর্জাতিক

ইন্দোনেশিয়ায় নির্বাচন আজ, চলছে ভোট গ্রহণ

ইন্দোনেশিয়ায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ভোট শুরু হয়েছে। আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ২০৫ মিলিয়ন মানুষ নিবন্ধিত ভোটার। তাই এবারের নির্বাচন, একদিনের আয়োজনে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও জটিল নির্বাচন।

ইন্দোনেশিয়া বিস্তৃত দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতি, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম নির্বাচনী গণতন্ত্র এবং বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত স্বৈরশাসক সুহার্তোর স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর থেকে দেশটি বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় নির্বাচন সাধারণত একদিনে হয়। ২০১৯ সালে ৮১৯ জন নির্বাচন কর্মী মারা যান কাজের চাপে, তাই সরকার এবার স্বেচ্ছাসেবীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিন দেশজুড়ে থাকবে সাধারণ ছুটি। প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকরা এবার সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও নির্বাচন করবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গণনা শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে গেলেও ফলাফল সাধারণত দিন শেষেই জানা হয়ে যায়।
বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জের এই দেশে নির্বাচন পরিচালনা করা একটি বিশাল বিষয়।

দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও প্রশস্ত এবং তিনটি টাইম জোনে বিস্তৃত। ১৭হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশটিতে ১৫০টিরও বেশি ভাষা রয়েছে।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তিন প্রার্থী হলেন, বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রাবোয়ো, জাকার্তার সাবেক গভর্নর আনিয়েস বাসওয়েদান ও সেন্ট্রাল জাভার গভর্নর গাঞ্জার প্রানোয়ো। আরেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রাবোয়োকে নিয়েও ভোটারদের মধ্যে বিভেদ আছে। সাধারণ নির্বাচন কমিশনের মতে, এবার তরুণ ইন্দোনেশিয়ানরা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ নিবন্ধিত ভোটারদের প্রায় অর্ধেকই ৪০ বছরের কম বয়সী। জরিপ বলছে, নির্বাচনে প্রাবোয়ো অনেক এগিয়ে থাকবেন। তবে তিনি ৫০ শতাংশের বেশি কিংবা ২০ প্রদেশের অন্তত ২০ শতাংশ ভোট পাবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। এ পরিমাণ ভোট পেলে তিনি জুনে রানঅফ ভোট এড়িয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। গাঞ্জারও জোকোর নীতির সিংহভাগই অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাকে ‘জোকো লাইট’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, গাঞ্জার তাঁর বার্তা স্পষ্টভাবে দিতে হিমশিম খেয়েছেন। আর জরিপ বলছে, তার সমর্থন ২০ শতাংশের আশপাশে ঘুরছে। এ নির্বাচনি দৌড়ে আনিয়েসকে দেখা হচ্ছিল পিছিয়ে পড়া তৃতীয় প্রতিযোগী হিসেবে।

ছয় মিলিয়ন নির্বাচন কর্মকর্তা গোটা দেশ ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। তারা যত বেশি সম্ভব মানুষকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিছু জায়গায় যাতায়ত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। কর্মকর্তা ঘোড়ায় চেপে, নৌকায় করে, হেলিকপ্টারে চড়ে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেটে ওইসব জায়গায় ভোটারদের কাছে পৌঁছেছেন। ইন্দোনেশিয়ায় নির্বাচন আয়োজন এক মহাযজ্ঞ। প্রেসিডেন্ট প্রার্তীরা সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বাণিজ্যে দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চালিত করার অঙ্গীকার করেছেন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবং অবৈধ লগিং ইন্দোনেশিয়ার টেকসই ভবিষ্যতের জন্য চ্যালেঞ্জ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d