এত খাবার একসঙ্গে পাব ভাবি নাই, বসুন্ধরার ত্রাণ পেয়ে বৃদ্ধা জিজিয়া
‘এমনিতে আমার ঘরবাড়ি ছিল না। গোল পাতা দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে থাকতাম।
তারপর এই ঘূর্ণিঝড় আর বন্যা আমার সব তছনছ করে দিয়েছে। রান্না করে খাওয়ার মতো অবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এক বস্তা খাবার পেয়েছি। এত খাবার একসঙ্গে পাব কখনো ভাবিনি। বসুন্ধরা গ্রুপের স্যাররা যেমন আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন, আল্লাহ যেন তাদেরও খুশি করেন। ’
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বাগেরহাটের রামপালে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা পেয়ে এভাবেই অনুভূতি প্রকাশ করেন ৮০ বছর বয়সী জিজিয়া বেগম।
এদিন দুপুর দেড়টার দিকে রামপালের মল্লিকের বেড় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার ৫০০ জনকে ত্রাণ সহায়তা দেয় দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। তার আগে ১২টার দিকে মোংলার চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে খাদ্য সামগ্রী সহায়তা দেওয়া হয় এক হাজার অসহায় মানুষকে। সহায়তা সামগ্রীর মধ্যে ছিল তেল, চাল, চিনি, লবণ, চিড়া, নুডলস, টোস্ট ও ডালসহ কয়েক প্রকারের খাদ্য।
এ ত্রাণ সামগ্রী পেয়ে হাসির ঝিলিক দেখা যায় জিজিয়া বেগমের চোখে-মুখে। তিনি বলেন, ‘আসলে এখনকার দিনে কেউ কাউকে বিনামূল্যে খাবার দেয় না। ঢাকা থেকে এসে আমাদের সবাইকে ডেকে খাবার দিয়েছে, এতে আমরা খুশি হয়েছি। ’
উপজেলার বড় সন্ন্যাসী থেকে আসা ক্ষতিগ্রস্ত হামিদা বেগম বলছিলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছেন ২৩ বছর হলো। তারপর মানুষের দ্বারে দ্বারে চেয়ে খাই। বাড়িতে চাল, ডাল, তেল কিছু নেই। বসুন্ধরা গ্রুপ যে খাবার দিয়েছে তা দিয়ে একটু ভালো খেতে পারব। ’
রামপাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে কথা হচ্ছিল তাছলিমা বেগমের (৪০) সঙ্গে। ঘূর্ণিঝড়ে ঘরের চাল উড়ে গেছে তার। পানিতে ডুবেছে রান্নাঘর। স্বামী অসুস্থ। দুই মেয়েকে বাড়ি রেখে ছয় বছর বয়সী ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এখানে এসেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ত্রাণ সহায়তা নিতে।
অসহায় তাছলিমা বেগম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে বসতঘরের চালা উড়ে গেছে, পানিতে ভেসে গেছে রান্নাঘর। ঝড়ের দিন থেকে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে চাল-ডালসহ এক বস্তা খাবার পেয়েছি। কয়েকদিন বাচ্চাকাচ্চা ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পেট ভরে খেতে পারবো। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের বিপদে এগিয়ে এসেছে, আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন। ’
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট-৩ (মোংলা ও রামপাল) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। এসময় রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হক লিপন, বসুন্ধরা গ্রুপের জিএম ফয়জুর রহমান, ডিজিএম মাসুদুর রহমানসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য হাবিবুর নাহারের ব্যক্তিগত সহকারী রেদওয়ান মারুফসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।