এমপি আনার হত্যাকাণ্ড, ভারতে জিহাদ নামে আরও এক যুবক আটক
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার জিহাদ নামে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। তিনি খুলনার দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামের জয়নাল হাওলাদার।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি জানায়, জিহাদ অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে বসবাস করতেন। দুই মাসে আগে সংসদ সদস্য আনারকে হত্যার জন্য কলকাতায় আনে আখতারুজ্জান শাহীন। খুনের সময় আরও চার বাংলাদেশি ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। কিলিং মিশন শেষে মরদেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে গুম করা হয় বলে জানান জিহাদ। আজ উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাত আদালতে জিহাদকে তোলা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
অপরদিকে সংসদ সদস্য আনারের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারে রাতেই আটক ক্যাব চালককে নিয়ে কলকাতায় অভিযানে নামে সিআইডি। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কলকাতার কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকায় অভিযানে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তারা। সরিয়ে দেয়া হয় আশপাশের লোকজনকে।
ক্যাব চালক জোবায়ের স্বীকারোক্তিতে জানান, সংসদ সদস্য আনারের লাশ গুমের সময় ৩ জন উঠেছিলেন ওই ক্যাবে। এরপর নানা পরিকল্পনার করে মরদেহ ফেলা হয় কৃষ্ণমাটি এলাকায়। মরদেহ গুম করতে ব্যবহৃত সাদা রঙের ওই গাড়ি জব্দ করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
এদিকে, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ড তদন্তে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারতীয় পুলিশের চার সদস্য ঢাকায় এসে পৌঁছান। ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস হয়ে তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দফতরে যান এবং সেখানে বৈঠক করেন। এরপর সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয়ে যান।
পরে ব্রিফিংয়ে আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের অফিসারসহ চার ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
বাংলাদেশ এবং ভারতের আর কেউ এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত কি-না এমন প্রশ্নে হারুন বলেন, এ ব্যাপারে তদন্তের পর বলা যাবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আলোচিত এ ঘটনাটি তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলও শিগগির কলকাতায় যাবে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ভারতীয় পুলিশের কাছে আটক হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
ডিবি জানায়, এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার গত ১৩ মে নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন। পরে তার মরদেহ থেকে হাড্ডি ও মাংস ছাড়িয়ে কয়েকটি ট্রলিব্যাগে করে সরিয়ে ফেলা হয়।
চিকিৎসার কথা বলে ১২ মে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যান এমপি আনার। পরদিন ১৩ মে কৌশলে এমপি আনারকে নিউটাউনের সেই ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যান হত্যাকারীরা।