কাপ্তাই লেকে কমছে মাছের পরিমাণ, বিপাকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা
প্রমত্তা কর্ণফুলী নদীতে ষাটের দশকে বাঁধ দেওয়ার ফলে রাঙামাটির বিস্তৃত এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় ৩৬৫ বর্গমাইলের কাপ্তাই লেক। প্রথমদিকে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো মূল উদ্দেশ্য। তবে পরবর্তী সময়ে এই লেক হয়ে ওঠে অনেক মানুষের জীবন জীবিকার উৎস। শুরু থেকে কাপ্তাই লেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন শুরু হয়। এক সময় কাপ্তাই লেকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছের দেখা পাওয়া গেলেও বর্তমানে সেই জৌলুশ আর নেই। সময়ের বিবর্তনে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই প্রজননকেন্দ্র।
সম্প্রতি রাঙামাটির অন্যতম মাছের বিপনন কেন্দ্র কাপ্তাই ফিসারি ঘাটে গিয়ে কথা হয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে। যারা কাপ্তাই লেকের উপর নির্ভরশীল হয়ে দীর্ঘবছর মাছের ব্যবসা করে আসছেন। অধিকাংশ মৎস্য ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীরা বলছেন, বর্তমানে তাদের দুর্দিন চলছে। এমনিতে শীতের মৌসুমে কাপ্তাই লেকে মাছের পরিমাণ কমে আসে। তবে অনান্য বছরের তুলনায় দিন দিন কমে যাচ্ছে কাপ্তাই লেকে মাছের পরিমাণ। এতে হতাশ হয়ে দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন অনেক ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া একসময় এই ব্যবসায় অনেকে নিয়োজিত থাকলেও বর্তমানে মাছের ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় জড়িয়ে গেছেন অনেকে। এদিকে বর্তমানে যেই অল্প পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে লেকে তৎমধ্যে ছোট মাছের সংখ্যায় বেশি। বিশেষ করে কাচকি, ছাপিলা, মলা-ঢেলা জাতের মাছ গুলো পাওয়া যাচ্ছে। বৃহৎ আকারের তেমন কোন মাছ একদম ধরা পড়ছেনা বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে কথা হলে কাপ্তাই ফিসারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জামাল সদর জানান, বর্তমানে ব্যবসা এতটাই মন্দ যাচ্ছে যে ব্যবসা চালিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কাপ্তাই লেকে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে মাছ ধরা পড়ছে অনেক কম। এতে আয় রোজগার কমে গেছে, শ্রমিক- কর্মচারীদের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে। সেইসাথে এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের দুর্দিন চলছে।
এ বিষয়ে কথা হলে কাপ্তাই ফিসারি ঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) কর্মচারী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, কাপ্তাই লেকে মাছ ধরা শুরুর পর থেকে প্রথমদিকে ভালো পরিমাণ মাছ পাওয়া যেতো। তবে দিনদিন কাপ্তাই লেকে মাছের পরিমাণ কমছে। তিনি জানান, গত ১ মাস আগেও কাপ্তাই লেকে ভালো মাছ পাওয়া গেছিলো তবে বর্তমানে অনেকটা কমেছে। এছাড়া আশা করা যাচ্ছে শীত মৌসুম চলে গেলে কাপ্তাই লেকে আবারো মাছের পরিমাণ বাড়বে।