‘কোটি টাকা কমিশন নিতে র্যাম্প নামাতে চায় সিন্ডিকেট’
একটি সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা কমিশন নিতে চট্টগ্রামের টাইগারপাসে দ্বিতল সড়কে র্যাম্প নির্মাণ করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান। আজ বুধবার বিকেলে নগরীর টাইগারপাস মোড়ে ‘সিআরবি রক্ষা মঞ্চের’ এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
সিআরবি রক্ষা মঞ্চের সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘টাইগারপাস থেকে সিআরবি অভিমুখী দ্বিতল সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের কোনো যুক্তি নেই। নিউমার্কেট থেকে সহজেই অল্প দূরে জিইসির র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠা সম্ভব। বাস্তবে এখানে র্যাম্প নামানোর তোড়জোড়ের পেছনে আছে সিডিএর একটি সিন্ডিকেটের কোটি কোটি টাকা কমিশন খাওয়া ও লুটপাটের পরিকল্পনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দ্বিতল সড়কে র্যাম্প নামানোর সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বাতিল করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।’
সিআরবি রক্ষা মঞ্চের সমন্বয়ক বলেন, ‘সিডিএর কাজ হচ্ছে, পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা। অথচ সিডিএ অপরিকল্পিতভাবে একের পর এক অবকাঠামো তৈরি করে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করছে। আমরা বারবার বলছি, চট্টগ্রামে এতো ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দরকার নেই। এর মাধ্যমে যানজট নিরসন হবে না। উন্নয়নের নামে একের পর এক অপরিণামদর্শী প্রকল্পে চট্টগ্রামের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামকে কংক্রিটের নগরীতে পরিণত করা হচ্ছে।’
বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আসমা আক্তারের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিঞা, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ, গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক মশিউর রহমান খান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ, সাম্যবাদী আন্দোলনের অপু দাশ গুপ্ত, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক স্বপন মজুমদার, বাসদ জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয়, অ্যাডভোকেট বিশুময় দেব, বাসদের জেলা সদস্য আহমেদ জসিম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপা মজুমদার ও মিরাজ উদ্দিন।
চট্টগ্রাম নগরীর দৃষ্টিনন্দন আইকনিক সড়ক হিসেবে পরিচিত টাইগারপাস থেকে রেলওয়ে পাবলিক হাইস্কুল পর্যন্ত ৪৬টি গাছ কাটার অনুমোদন দেয় বন বিভাগ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের জন্য গাছগুলো কাটার সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সিডিএ। গাছ নিধন ও দ্বিতল সড়কের অবয়ব নষ্টের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পরিবেশকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ আন্দোলনে নামেন।
গত ২ এপ্রিল প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেনের নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের একটি প্রতিনিধি দল সিডিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তারা এই সড়কে র্যাম্প নির্মাণ না করার অনুরোধ করেন। এই সময় র্যাম্পের নকশা সংশোধনের আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান। যদিও তা প্রত্যাখান করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এ অবস্থায় গাছ কেটে র্যাম্প নির্মাণ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী।