আন্তর্জাতিক

গাজায় মুখে মুখে কিশোর ‘নিউটন’

অন্ধকারে ডুবে আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা। রাতের আঁধারে আলোর দেখা নেই। প্রচণ্ড গরমে পাখার বাতাস নেই। হাসপাতালের সরঞ্জামগুলোও বিদ্যুতের অভাবে অচল।

গাজার এমন দুর্দিনে মৌলিক কিছু সরঞ্জাম দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করল ফিলিস্তিনি এক কিশোর। নাম হাসসাম আল-আত্তা (১৫)। এমন অভিনব কাজে মুখে মুখে এখন হাসসামের নাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের এলাকায় ইতোমধ্যেই ‘গাজার নিউটন’ হিসাবেও উপাধি পেয়েছে সে। আলজাজিরা।

৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি ভয়াবহ হামলায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে গাজা। বেশির ভাগ আবাসিক ভবনই মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক অবকাঠামো। এ অবস্থায় পকেট ডায়নামো আর টিনের পাখা ব্যবহার করে ছোট পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে হাসসাম। সে বলে, ‘আমার এলাকার সবাই আমাকে গাজার নিউটন বলে ডাকে। যুদ্ধের কারণে আমি যেখানে থাকি সেখানে কোনো বিদ্যুৎ নেই। তাই আমি আমার সাধ্যমতো এখানে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করেছি।’ বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায়, ‘আমি বাজার থেকে ১ শেকেল (ফিলিস্তিনি মুদ্রা) দিয়ে একটি পকেট ডায়নামো কিনে আনি।

সাধারণত, যখন একটি ডায়নামোকে ঘোরানো হয়, তখন এর সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই মূলনীতি অনুসরণ করে আমি আমাদের বাড়ির চালে একটি ডায়নামো স্থাপন করি এবং এটির সঙ্গে একটি পাখা যুক্ত করে দেই। বাতাসের সাহায্যে এই পাখা ঘুরলে ডায়নামো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।’ গাজার এই উদ্যমী কিশোর আরও বলে, ‘আমাদের যদি ব্যাটারি থাকত তাহলে হয়তো সেগুলোকে রিচার্জ করে রেখে আরও বেশি বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যেত। আমরা অল্প করে হলেও ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুতের সুবিধা পেতাম।’

হাসসাম জানায়, তার যমজ ভাগ্নেদের আলোর অভাবে ভয় পেতে দেখে এ উদ্ভাবনের বিষয়টি তার মাথায় আসে। যুদ্ধের আগে সে জাবেল মুকাবের স্কুলের ছাত্র ছিল। হাসসাম বলে, ‘আমার মতো শত শত উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন কিশোর আছে গাজায়। কিন্তু কেউই তাদের দিকে নজর দেয় না, কাজের প্রশংসা করে না।’ আরব বিশ্বের দেশগুলো ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এই কিশোর আরও বলে, ‘আমরা আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d