চট্টগ্রামে যানজট নিরসনে সমন্বিত প্রচেষ্টা
চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট নিরসনে চলছে সমন্বিত প্রচেষ্টা। নগরীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা ধরনের যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে গত প্রায় তিন দশক ধরে মহানগরী সম্প্রসারিত না হওয়ায় যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিগত মাস্টারপ্ল্যানগুলোতে এই মহানগরীর ভবিষ্যৎ ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। তার ওপর বর্তমানে নানা পয়েন্টে সড়কের ত্রুটিপূর্ণ বাঁক, যত্রতত্র ইউটার্ন নগরীর যানবাহন চলাচলের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। ধীর গতির যানবাহন স্বভাবতই যানজটের সৃষ্টি করছে। তাদে মতে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে পিক আওয়ারে নগরীর ডজনখানেক স্পট যানজটের কবলে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে জটে আটকে পড়া যানবাহনের গতি নেমে আসে ঘণ্টায় মাত্র ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। এতে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা।দিনে অন্তত দুই বার এবং সন্ধ্যার পর একাধিকবার নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১২টি স্পটে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিস্থিতি কীভাবে সহনীয় করা যায় সে ব্যাপারে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ করতে সম্প্রতি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে চট্টগ্রাম মহানগরী পুলিশের (সিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখা করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে। প্রায় ১৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আনুমানিক ৭০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত চট্টগ্রাম মহানগরীতে কয়েকটি উড়াল সেতুও রয়েছে। সব মিলিয়ে সড়ক অবকাঠামোগুলোকে কীভাবে যানজটমুক্ত মহানগরী গড়ে তুলতে কাজে লাগানো যায়, এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ইতিমধ্যে একাধিক গোলটেবিল বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (উত্তর) জয়নুল আবেদিন বলেন, জিইসির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার থেকে নামার পর ডানে-বামে যেসব ইউটার্ন ছিল সেগুলো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। এতে ট্রাফিক স্লো হয়ে যে বড় জটলা সৃষ্টি হতো সেটি দূর হয়েছে। চট্টগ্রামের ফ্লাইওভারে দেখছি স্পিডব্রেকার, মাঝখানে ক্রসিং, যা ফ্লাইওভারে থাকা ঠিক নয় । আবার যেসব স্থানে ফ্লাইওভার থেকে র্যাম্প নামার কথা নয় সেখানে র্যাম্প নামানো হয়েছে। ফলে যানজটের যে পরিস্থিতি ঐসব স্পটে হয়েছে তা দূর করতে নানা ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। সফলও হয়েছি। তিনি বলেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি প্রাইভেট কার আসে। ফলে ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য একটি স্কুলে ৩০০ প্রাইভেট কার আসলে সড়ক স্বভাবতই রুদ্ধ হয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করলে ঐ যানজট থাকে না।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সামনের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে যাদের পার্কিংব্যবস্থা নেই, বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্র যানবাহন পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা রাখেনি, যা যানজটের অন্যতম কারণ। বাওয়া স্কুল তাদের বিশাল মাঠটি নানা মেলা-অনুষ্ঠানে ভাড়া দিচ্ছেন, অথচ স্কুল চলাকালে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের যানবাহন রাখার ব্যবস্থা করে দিলে ওয়াসা থেকে গরিবুল্লাহ শাহ পর্যন্ত যানজট হয় না।