চট্টগ্রাম

চমেকে স্বাচিপ কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, একাংশের কর্মীসভা

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ শাখা কমিটি বিলুপ্ত হলেও সংগঠনটির ব্যানারে কর্মীসভা করার অভিযোগ উঠেছে। এতে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ উপস্থিত থাকলেও এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না স্বাচিপ চমেক শাখার সদ্য সাবেক আহ্বায়ক, সদস্য সচিব।

স্বাচিপ চমেক শাখার কমিটি গঠনের আগে এমন সভা আয়োজন করা নিয়ম বহির্ভূত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

জানা গেছে, গত ২২ এপ্রিল স্বাচিপ চট্টগ্রাম জেলা শাখা ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আলোচনা সভা ও দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে পুরোনো আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রস্তাবনা চাওয়া হয়। চমেক শাখার সভাপতি পদে ৫ জনের এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জনের নাম প্রস্তাব করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।

এরমধ্যে সভাপতি পদে প্রার্থী হন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, ডা. মনোয়ার উল হক শামীম, ডা. রবিউল করিম, ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরী ও ডা. রফিকুল মাওলা। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন ডা. রবিউল করিম, ডা. প্রণয় কুমার দত্ত, ডা. আবুল হোসেন শাহীন, ডা. রিজোয়ান রেহান, ডা. ধীমান বড়ুয়া, ডা. বিপ্লব কুমার বড়ুয়া।

কাউন্সিল শেষ হওয়ার ৪ দিন পর ২৭ এপ্রিল ‘স্বাচিপের জরুরি কর্মীসভা’ নাম দিয়ে বৈঠক ডাকেন চিকিৎসক নেতারা। চিকিৎসকদের হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে সকলকে অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়। চমেক নতুন ভবনের নিচ তলায় অবস্থিত নিউ কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। চিকিৎসকদের একটি পক্ষের দাবি, এ কর্মীসভা আয়োজনের নেপথ্যে ছিলেন তিনি।

সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্বাচিপের কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে সাদা কাগজে সবার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। বলা হয়, সভাপতি হিসেবে চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক ডা. রবিউল করিমকে মনোনীত করার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। এর বাইরে অন্য কাউকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করা হলে মেনে নেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা করা হয় সভায়।

চমেক শাখা স্বাচিপ কমিটির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন প্রার্থী থাকলেও ওইদিন (২৭ এপ্রিল) সভায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার, ডা. মনোয়ার উল হক শামীম, ডা. রবিউল করিম, ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরী, ডা. আবুল হোসেন শাহীন, ডা. প্রণয় কুমার দত্ত।

বাকি প্রার্থীদের বাদ দিয়ে স্বাচিপ চমেক শাখার এমন কর্মীসভা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের অন্য একটি পক্ষ। তারা বলছেন, কর্মীসভা করতে হলে সকলকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে। অনেককে বাদ রেখে এমন কর্মীসভা দুরভিসন্ধিমূলক।

স্বাচিপের কর্মীসভা অথচ এ ব্যাপারে জানেন না স্বাচিপ চমেক শাখার সদ্য সাবেক আহ্বায়ক-সদস্য সচিব।

সভা আয়োজনের বিষয়ে ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা যায়নি।

স্বাচিপ চমেক শাখার বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর চমেক ক্যাম্পাসে একটি সভা হয়েছে বলে শুনেছি। কিছু অতি উৎসাহী এ সভা করেছে। কমিটি শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। এ নিয়ে সভা-সমাবেশ করার কিছু নেই।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে নেই। তবে গত ২২ এপ্রিল যে কাউন্সিল হয়েছিল, সেদিন দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু আগেই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং পরবর্তীতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য নাম প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। ওইদিনই সর্বসম্মতিক্রমে আমরা প্রার্থীদের বায়োডাটাগুলো ঢাকায় নিয়ে এসেছি। যা এখন যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। শীঘ্রই আমরা কমিটি ঘোষণা করবো।

তিনি আরও বলেন, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পরও যদি কেউ স্বাচিপের ব্যানারে কোনো সভা ডাকে, তবে তা এখতিয়ার বহির্ভূত। যদি আমরা এমন কোন প্রমাণ পাই, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d