ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়কদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে ছাত্র সংসদ কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি করেছেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, আমরা জানি বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু থেকেই অরাজনৈতিক ব্যানারে আন্দোলন করে। আন্দোলনের একটা পর্যায়ে যখন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর সহিংসতা চালায়। তখন আরো বেশ কিছু দাবির সাথে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিও উঠে। তখন সবাই দলমত নির্বিশেষে এই দাবির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যায়। কিন্তু আজ যখন স্বাধীন দেশ পেলাম, আমরা তখন দেখলাম আমাদের মধ্যেই কিছু মানুষ ঘুরে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণে দাবির বিপক্ষে দাড়িয়ে গেল।
আমরা মনে করি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির বিপক্ষে গিয়ে কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হতে পারে না। আমরা খুব শীঘ্রই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করণ, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ কার্যকর করাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবি-দাওয়া সহ আমরা প্রশাসনের সাথে বসব ইনশাআল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্যাডে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, প্রিয় ববিয়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঘোষিত প্রাণের নয় দফা দাবির অন্যতম একটি দফা ছিল ‘ক্যাম্পাসগুলোতে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে ছাত্র সংসদ কার্যকর করা’। অর্থাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্র সংসদ ব্যতিত অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম সমর্থন করে না।
যেহেতু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দাবি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল ধরনের দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সেহেতু, এমন ব্যক্তি যারা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে দলীয় রাজনীতির পক্ষাবলম্বন করেন। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করতে পারেন না।
যে সকল সমন্বয়ক ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি চলমান রাখার পক্ষাবলম্বন করেছেন, সেই সকল সমন্বয়কদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পরিষদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।
কেন্দ্র ঘোষিত পরিষদে আমাদের অনেক অগ্রগামী সহযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় আমাদের বর্তমান পরিষদটি পূর্ণাঙ্গ নয় বলে আমরা মনে করি। শীঘ্রই আপনাদের মতামতের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ত্যাগী, সংগ্রামী এবং অগ্রগামী সহযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ পরিষদ ঘোষণা করা হবে বলে আশা করছি।
আমরা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্র সংসদ ব্যতিত কোনো দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি চাই না। অতএব, যদি কখনও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিজেদের রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা দিবে, সেদিন থেকে আমরা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করব না।