ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, যাওয়া হলো না অস্ট্রেলিয়া
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক পাত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয় জাররাফ আহমেদ ওরফে প্রীতমের (৩১)। পরে তার (প্রীতমের) যাওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া।
এজন্য ঢাকায় করা চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আর অস্ট্রেলিয়া যাওয়া হলো না। সম্প্রতি গ্রামে গিয়েছিলেন প্রীতম। গ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় জাররাফ আহমেদ প্রীতমের।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ভোরে রাজধানীর দারুস সালাম থানার প্লট নম্বর ৫/এ ৫নং দারুস সালাম রোড মিরপুর টাওয়ারের দক্ষিণ পাশে টয় পার্ক দোকানের সামনে পাকা রাস্তার ওপরে তিনি ছিনতাকারীর কবলে পড়েন। সেখানে তার জিনিসপত্র ছিনতাইকারীরা নিতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এ সময় জাররাফ আহমেদ প্রীতমকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।
জানা যায়, ভুক্তভোগী নজিপুর থেকে সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। প্রীতমের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নজিপুর গ্রামে। তার বাবার নাম বদরুজ্জামান। প্রীতম একটি বেসরকারি সফটওয়্যার কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন এবং মিরপুরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর দারুস সালাম থানায় ভুক্তভোগীর চাচাতো বোন কানিজ শারমিন একটি অভিযোগ করেছেন।
নিহত প্রীতমের বন্ধু দেবাশীষ মণ্ডল বলেন, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৫টা নাগাদ আমার এক বন্ধুর রায়হানের ফোনে জানতে পারি প্রীতম নিখোঁজ। আমি অফিস থেকে বের হয়ে জাকির,তুসার আর রায়হান মিলে থানা ও হাসপাতালে খোঁজ করতে করতে দারুসসালাম থানায় গিয়ে সন্ধানপাই। পরে জানতে পারি যে আমাদের বন্ধু আর নেই। তার লাশ সোহরাওয়ার্দী হাস্পাতালের মর্গে রাখা আছে।
তিনি বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই পাত্রী অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। প্রীতমের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। আর যাওয়া হলো না।
ভুক্তভোগী প্রীতমের শ্যালক মীর পিয়াস বলেন, মঙ্গলবার রাতে গ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। ভোরবেলা গাবতলীতে বাস থেকে নেমে তিনি মিরপুরে যাচ্ছিলেন। পথে ভোর ৫টার দিকে মিরপুর ১ নম্বর এলাকায় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ ও প্রয়োজনীয় জিনিস ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নেন। তিনি বাধা দিলে তাকে তারা ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, কয়েকদিন পরই অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল প্রীতমের। এজন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকায় ফিরে তিনি লাশ হয়ে গেলেন। এ খবর তার বাবাকে জানানো হয়নি। কারণ তার বাবার কয়েকদিন আগে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাকে মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করি। পরে সন্ধ্যার দিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে খোঁজ নেই। এরপর জানতে পারি প্রীতমের মরদেহ সেখানে আছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) আমরা মরদেহ বুঝে পেয়েছি। তাকে গ্রামে দাফন করা হবে।
দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, প্রীতম নামে এক যুবক ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে খুন হয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারিনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।