খেলা

টেনিসকে বিদায় জানালেন অ্যান্ডি মারে

ঘোষণাটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। প্যারিস অলিম্পিকে একক ইভেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহারের পর বাকি ছিল কেবল দ্বৈত ইভেন্ট। সেখানে হারের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো অ্যান্ডি মারের টেনিস ক্যারিয়ার। এর মধ্যে টেনিসের সোনালি প্রজন্মের আরেকটি অধ্যায়ও শেষ হলো।

প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের দ্বৈত ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের টেলর ফ্রিৎজ ও টমি পল জুটির কাছে ৬-২ ও ৬-৪ গেমে হেরেছে গ্রেট ব্রিটেনের মারে ও ড্যান ইভানস জুটি। এর আগে চোটের কারণে অলিম্পিকের একক ইভেন্ট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন মারে।

ম্যাচ শেষে অ্যান্ডি মারে বলেন, নিজের ক্যারিয়ার, অর্জন এবং এই খেলায় যতটুকু অবদান রাখতে পেরেছি তা নিয়ে আমি গর্বিত। অবশ্যই এটা আবেগের, কারণ এটাই আমার শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। তবে এখন আমি সত্যিই খুশি। যেভাবে শেষ হলো তাতে আমি খুশি। এটা ভালো লাগছে যে অলিম্পিকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শেষ করতে পেরেছি।

সার্বিয়ান কিংবদন্তি এবং ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী নোভাক জোকোভিচ মারের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী। ব্রিটিশ এ তারকাকে ‘অবিশ্বাস্য প্রতিদ্বন্দ্বী’ বলে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন জোকোভিচ। সার্বিয়ান এই টেনিস তারকা বলেন, টেনিসে সেরা যোদ্ধাদের একজন। আমি নিশ্চিত তার লড়াই করার চেতনা অনেক প্রজন্মকেই প্রেরণা জোগাবে।

২০১৩ সালে উইম্বলডন এককে জোকোভিচকে হারিয়েই ব্রিটিশদের ৭৭ বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়েছিলেন মারে। সেসময় উইম্বলডনে ছেলেদের এককে মারেই ছিলেন প্রথম ব্রিটিশ চ্যাম্পিয়ন। ২০১২ সালে জিতেছিলেন ইউএস ওপেন। ২০১৬ সালে আবারও উইম্বলডন জেতেন মারে।

২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে রজার ফেদেরারকে হারিয়ে স্বর্ণও জেতেন। চার বছর পর রিও অলিম্পিকে হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রোকে হারিয়ে ছেলে ও মেয়েদের ইভেন্ট মিলিয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অলিম্পিকের একক ইভেন্টে দু’টি স্বর্ণ জয়ের কীর্তি গড়েন। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে ৪৬টি শিরোপা জিতেছেন মারে। প্রাইজমানি হিসেবে আয় করেছেন ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চোটে জর্জরিত ছিলেন। ২০১৯ সাল থেকে কোমরে ‘মেটাল হিপ’ নিয়ে খেলছেন। এ বছরের শুরুতে চোট পান অ্যাঙ্কেলেও। এরপর অস্ত্রোপচার করিয়ে অপসারণ করেছেন মেরুদণ্ডের সিস্ট, যে কারণে খেলতে পারেননি উইম্বলডনে।

বিদায়বেলায় মারেকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বর্তমান উইম্বলডন ও ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন কার্লোস আলকারাজ। স্প্যানিশ এই টেনিস তারকা বলেন, একই কোর্টে তোমার সঙ্গে দাঁড়ানোটা ছিল বিশেষ কিছু। কিংবদন্তিতুল্য ক্যারিয়ারের জন্য এবং সবার উদাহরণ হয়ে ওঠার জন্য অভিনন্দন। তুমি সব সময়ই একজন সমর্থককে পাবে এখানে।

রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও নোভাক জোকোভিচের সঙ্গে মারে ছিলেন টেনিসে ‘বিগ ফোরের’ একজন। ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী ফেদেরার ২০২২ সালে অবসর নেন। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী নাদালও বিদায় নিয়েছেন প্যারিস অলিম্পিক থেকে। শুধু জোকোভিচই এখনো খেলে যাচ্ছেন এবং উঠেছেন অলিম্পিকের সেমিফাইনালেও। শেষ হলো প্রজন্মের আরেক এক লড়াকু সেনার ক্যারিয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d