দেশজুড়ে

দুই পা-এক হাত নেই তারপরও বেঁচে থাকার লড়াই!

পাথরঘাটা (বরগুনা): মুখে হাসি আর মিষ্টি কথার বুলি। হাসি আর খেলায় মাতলেও শূন্যতা রয়েছে দুই পা, এক হাত বিহীন সুলতানার। এ শূন্যতায় কাঁদছে পরিবার ও প্রতিবেশীরাও।

জন্ম থেকেই সুলতানার দুটি পা নেই, ডান হাত নেই। এক হাতে ওপর ভর দিয়ে চলবে তারও কোনো উপায় নেই। বিছানাই যেন তার একমাত্র ভরসা। অন্য শিশুরা বাড়ির উঠানে লেখায় মেতে উঠলেও তাদের সঙ্গে খেলতে পারছে না। এখন বুঝতে শুরু করেছে সুলতানা। ওর হাত নেই, পা নেই।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই শিশুর কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা খাদিজা বেগম। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের সুলতান মিয়ার মেয়ে সুলতানা। সুলতানার জন্ম ২০২১ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি। অনেক আদর করে বাবার নামের সঙ্গে মিল রেখে শিশুর নাম রেখেছেন সুলতানা।

প্রথম সন্তান সুমনের জন্ম নেওয়ার ১৭ বছর পর জন্ম হয় সুলতানার। বাবার আর্থিক সচ্ছলতা না থাকার কারণে এখন দিনমজুরি কাজ করে সুমন। চার জনের সংসারে এক ছেলে ও মেয়ে সুলতানাকে নিয়ে অভাবে কাটে তাদের সংসার।

কথা হয় সুলতানার বাবা সুলতানের সঙ্গে, তিনি বুক ভরা কষ্ট নিয়ে বলেন, আমাদের কান্না ছাড়াই আর কিছুই নাই। আমাগো শান্তিই হলো কান্না। এখন মেয়েটার বয়স তিন বছর। দুইটা পা এবং একটি হাত নেই। মেয়ে চলাফেরা করার জন্য অনেক আশা করে কিন্তু পারে না। সব পোলাপান খেলে ও খেলতে পারে না। আমার সন্তান, আমি কোনো জায়গায় ফালাইতে পারি না। আমি যতদিন আছি আমিই লালন পালন করমু কিন্তু বড় হইলে ভবিষ্যতেকে দেখবে এই চিন্তাই করি।

মা খাদিজা বেগম, মনুরে আল্লায় এইভাবে বানাইছে, মনুর বয়স এহন তিন বছর। এখন কথা বলতে পারে, সবাই হাটে ও হাঁটতে পারে না। বলে মা মুই হাঁটতে পারি না ক্যা? মোর পাও নাই ক্যা। ওর কথার উত্তরে একটাই বলি ‘তোমারে আল্লায় বানাইছে’। মাঝে মাঝে সুলতানা বলে, মোর হাত পা অইবে তো, মুই হাঁটতে পারমু? মা… মোর পা অইবে… মুই হাঁটতে পারমু…!

সিনিয়র সাংবাদিক মির্জা শহিদুল ইসলাম খালেদ বলেন, শিশু স্বাভাবিক বেঁচে থাকার অধিকার যেমন আছে তেমনি রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরাও সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজ সহযোগিতা করে আসছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d