দুই হাজার টাকা বেতনে করেন ইমামতি, সেটাও ঠিকমতো পান না
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার রূপসীহাটা জামিয়া মসজিদের ইমাম মিজানুর রহমান (৪৫)। ১২ বছর ধরে তিনি একটি মসজিদে ইমামতি করছেন। ২০১৪ সালে তার বেতন ছিল এক হাজার টাকা। ৬ বছর পর বেতন বেড়েছে আরও এক হাজার টাকা। বর্তমানে ২ হাজার টাকা বেতনে ইমামতি করছেন তিনি। তবে সেই বেতনও ঠিকমতো পান না।
এবার ঈদের আগেও বেতন পেতে দেরি হওয়ায় খুব কষ্ট করে দুই ছেলেকে ঈদে পাঞ্জাবি বানিয়ে দিয়েছিলেন ইমাম মিজানুর রহমান। তবে তিনি নিজের জন্য কিনতে পারেননি নতুন পোশাক।
মিজানুর রহমান পাশাপাশি একটি মাদরাসায়ও শিক্ষকতা করেন। তবে সেখানেও বেতন সামান্য। এ বেতনেই চাকরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
শুধু মিজানুর রহমান নয়, তার মতো একই অবস্থা জামালপুরের অধিকাংশ মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের। সামান্য বেতনে চাকরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তাদের দাবি সরকার থেকে বছরের দুই ঈদে যদি ইমাম মুয়াজ্জিনদের সামান্য কিছু সম্মানি দিতো তাহলে প্রতি বছর ঈদটা অন্তত পরিবার নিয়ে তাদের স্বাভাবিকভাবে কাটাতো।
মিজানুর রহমান বলেন, আমি রূপসীহাটা মসজিদে ১২ বছর ধরে ইমামতি করছি। প্রথমে আমার বেতন ছিল এক হাজার টাকা। পরে দুইশ টাকা বাড়িয়েছিল। এরপর তিনশ টাকা বাড়িয়ে হয়েছিল ১৫০০ টাকা। বর্তমানে আমার বেতন দুই হাজার টাকা। এই বেতনে কোনোভাবেই চলে না। কষ্ট হলেও করার কিছু নেই এভাবেই চলতে হয়। সেটাও সময়মতো পাই না।
তার ছেলে-মেয়ে কতজন এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে। দুই ছেলেই মাদরাসায় পড়াশোনা করছে।
এদিকে মেলান্দহ পৌরসভার বাসুদেবপুর মজিদিয়া দারুল উলুম মাদরাসা জামিয়া মসজিদের ইমাম আরিফ মুহাম্মদ রহমানির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সামান্য কিছু বেতনে এক বছর ধরে ইমামতি করছি। যা বেতন দেয় তা খুবই কম। এ টাকায় একজন ইমামের সংসার কোনোভাবেই চলে না। ইমামতির পাশাপাশি মাদরাসায় শিক্ষকতা করলে দুইটা মিলে মাস শেষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা হয়। আমরা ইমামেরা অল্প কিছুতেই সন্তুষ্ট। বর্তমানে বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হয়, তবে ইমামদের বেতন কখনো বাড়ে না। গ্রাম অঞ্চলের মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন আরও কম।