দেশকে এগিয়ে নিতে হাতে অস্ত্র নয়, বই রাখবো
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেছেন, আমরা যেকোনো জায়গায় গেলে হাতে অস্ত্র নয়, একটা বই রাখবো। তাহলে আমাদের দেশ আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মানবিক কাজ করছে। এ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ঘিরে যারা পাঠাভ্যাস গড়ে তুলবে তারা আলোকিত মানুষ হবে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাঠে সপ্তাহব্যাপী বিভাগীয় বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুরুতে বেলুন উড়িয়ে সপ্তাহব্যাপী চট্টগ্রাম বিভাগীয় বইমেলার শুভ উদ্বোধন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরকালে দেখি বাস-ট্রেনে সবার হাতে বই। তখন মনে হতো কোরিয়ার মতো বই পড়ার অভ্যাস আমার বাংলাদেশে কবে হবে। আমার মনে হয় সেদিন আর বেশি দেরি নেই। বাংলাদেশে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে দায়িত্বে রয়েছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ। তিনিও একজন আলোকিত মানুষ। বই পড়ে যারা জ্ঞান অর্জন করতে চায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একদিন মানবিক মানুষ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে।
চট্টগ্রামের বইমেলাটি একটি অন্যতম বড় মেলায় পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সচিব খলিল আহমদ বলেন, বিগত ২০০২-০৪ সাল পর্যন্ত সময়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ইউএনও থাকাকালীন একুশে বইমেলা দেখতে ঢাকায় যেতাম, আর তখন দুঃখ করতাম-চট্টগ্রামে কেন বইমেলা হয় না। এখন হচ্ছে, বইমেলার জন্য চট্টগ্রামবাসীকে বাইরে যেতে হবে না। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিকে আলোকিত করতে সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বই মনস্ক জাতি গঠন করতে পারলে দেশ থেকে সন্ত্রাস ও মাদকসহ সব ধরনের অপকর্ম দূর হবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে সিনিয়র সহকারী কমিশনার নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী ও রাজীব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এমএ মাসুদ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক প্রকাশ মালেক মুস্তাকিম, নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালক নেসার উদ্দিন আয়ুব ও সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু। লেখক, প্রকাশক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বইপড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা, গবেষকদের সহায়তা ও উৎসাহ দিয়ে বইমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বিভাগীয় পর্যায়ে বইমেলার আয়োজন।
বইমেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনী সংস্থা ৭৫টি স্টলের রয়েছে। বাংলা একাডেমিসহ সরকারি প্রকাশনী সংস্থার ১০টি, জাতীয় পর্যায়ের ৪৭টি প্রকাশনী সংস্থা ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ১৭টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে।