জাতীয়রাজনীতি

নির্বাচনের আগে অগ্নিসন্ত্রাস করলে রেহাই নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে কোনো সহনশীলতা দেখানো হবে না। ২০১৩-১৪ সালের মতো অগ্নিসংযোগ এবং অমানবিক নৃশংসতা চালালে কেউ রেহাই পাবে না। খবর বাসস।

সোমবার (২ অক্টোবর) লন্ডনে ওয়েস্টমিনস্টারে মেথোডিস্ট সেন্ট্রাল হলে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন– বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৩-১৪ সালে আন্দোলনের নামে যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়ে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নারীসহ অনেক লোক গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। তারা অমানবিক জীবনযাপন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সন্ত্রাসবাদে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা এবং দেশের সম্পত্তি নষ্ট করা তাদের আন্দোলন। এর আগে ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জীবন নিয়ে এমন কোনো চেষ্টা করা হলে কোনো ক্ষমা করা হবে না।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলা বিএনপির পক্ষে শোভা পায় না কারণ তারা জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ধোঁকাবাজি খেলেছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন করে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার দেড় মাসের মধ্যেই দেশের জনগণ তাদের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ কখনই ভোট কারচুপিকারীদের ক্ষমতায় বসতে দেয় না। বিএনপি-জামায়াত জোট ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার নিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করে এবং সেই তালিকা দিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করে।

প্রধানমন্ত্রী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, তার সরকার নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য সমস্ত সংস্কার করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এখন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আন্দোলন করছে। সরকারপ্রধান হিসেবে তার ওপর ন্যস্ত নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে এতিমদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড স্থগিত করার পর খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে তার কিছুই করার নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আইন অনুযায়ী যা করতে পারেন তাই করেছেন।

অনেকেই এখন যুক্তি দিচ্ছেন, ‘আইন নিজের গতিতে চললেও খালেদা জিয়ার প্রতি আমি বেশি সহানুভূতি দেখাতে পারি’। ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড, ২১ আগস্ট, ২০০৪ গ্রেনেড হামলা, শেখ রেহানার বাড়িটিকে একটি পুলিশ ফাঁড়িতে পরিণত করা, যা তিনি জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রণীত আইনের অধীনে পেয়েছিলেন এবং তা বিএনপি সরকারের লঙ্ঘনের ঘটনা উল্লেখ করেন। ছেলে কোকোর মৃত্যুর পর তাকে (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়ার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি না দেবার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কীভাবে খালেদা জিয়ার জন্য আমার কাছ থেকে আরও সহানুভূতি আশা করে।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d