পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল
কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং পঞ্চগড়ে কাদিয়ানীদের কথিত সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে শুক্রবার, বা’দ জুমা বাইতুল মুকাররম উত্তর গেটে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক আল্লামা আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুরের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ।
আল্লামা আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুর বলেন, পঞ্চগড়ে ‘তথাকথিত আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ কাদিয়ানি সম্প্রদায় কর্তৃক আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি সালানা জলসার নামে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের মঞ্চ করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা অনতিবিলম্বে তাদের অবৈধ সালানা জলসা বন্ধ করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। যদি সরকার তাদের জলসা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের শীর্ষ মুরব্বি আলেম উলামা ও ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ এর সদস্য সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, জাতীয় সংসদে নবগঠিত সরকারের চলতি অধিবেশনে অন্যান্য মুসলিম দেশের ন্যায় এদেশেও যেন কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার প্রস্তাব তুলে বিল পাস করা হয়। এজন্য আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এটা এদেশের সাধারণ মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকার। এছাড়া এদেশে কাদিয়ানিরা তাদের ধর্মীয় পরিচয়ে বসবাস করবে। এই অধিকার সংবিধান তাদেরকে দিয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের পরিভাষা ও পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার অধিকার সংবিধান তাদেরকে দেয়নি। তাই পঞ্চগড়ে মুসলমানদের পরিভাষা ও পরিচয় ব্যবহার করে তাদের সালানা জলসা করা একটি অসাংবিধানিক কাজ। তাছাড়া বিগত বছর সেখানে তাদের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিলো। এবারো যদি তাদের জলসার কারণে সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, এর সম্পূর্ণ দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে।
এ সময় সমাবেশে বক্তাগন বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের দাবি হলো পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের সালানা জলসা বন্ধ করতে হবে। কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিশ্বের সকল মুসলিমের ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাদিয়ানিরা অমুসলিম। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলিম পরিচয়ে এবং মুসলমানদের পরিভাষা ব্যবহার করে কোনো জলসা করার অধিকার কাদিয়ানীরা রাখে না। বক্তারা কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং কাদিয়ানীদের অর্থ যোগানদাতা প্রাণ, আর এফ এল, ভিশনসহ তাদের দোসর সকল কোম্পানীর পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানান।
সমাবেশে মাওলানা এনামুল হক মুসা এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা নাজমুল হক, মুফতি নূর হোসেন নূরানী, মুফতি শুয়াইব ইবরাহীম, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, মুফতী আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মুফতী আলী আকরামসহ প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বাইতুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে পল্টন মোড় ঘুরে, নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে বিজয়নগর মোড়ে এসে শেষ হয়। দু’আ পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী।