পিটার হাস নিয়ে রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে আবার মুখোমুখী বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনে সহায়তা করেছেন বলে রাশিয়ার তরফ থেকে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, তারা বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে না বা সমর্থনও দিচ্ছে না। রাশিয়ার মুখপাত্র ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন।
গত বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মস্কোতে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, অক্টোবরের শেষে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে স্থানীয় বিরোধীদলের একজন সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন।
আর এই ধরনের কাজ ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্থূল হস্তক্ষেপের চেয়ে কম কিছু নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর তিনদিন পর শনিবার এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের বিবৃতি বাংলাদেশের সাংবাদিকদের কাছে পাঠিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি।
পিটার হাস ঢাকায় সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনে ভূমিকা রেখেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
তিনি বলেছেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠক নিয়ে মিস জাখারোভার ইচ্ছাকৃত ভুল উপস্থাপন সম্পর্কে আমরা সচেতন আছি।’
‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি একটি রাজনৈতিক দলের থেকে অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিও পক্ষপাত করে না,’ বলেছেন মার্কিন মুখপাত্র।
তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র এতে বলেন, “বাংলাদেশি জনগণ যা চায়, আমরাও সেটা চাই। আর তা হলো- অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যা শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হবে।’
আর বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার জন্য শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অভিন্ন লক্ষ্যে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা সরকার, বিরোধীদল, সুশূল সমাজ, ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সহযোগিতা করছে বলেও দাবি করেছেন ওই মুখপাত্র।
বাংলাদেশের নির্বাচন এগিয়ে আসার মধ্যে গত কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হচ্ছে। দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করে নানা বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন ও দাবি জানাচ্ছেন।
নির্বাচন ঘিরের বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই ভিসা নীতির প্রয়োগও শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কর্মকর্তারা।
আর যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপকে সমালোচনার চোখে দেখছে দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড।ড বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের শামিল বলেও মনে করছেন তারা।
এর আগেও মারিয়া জাখারোভা মস্কোতে ব্রিফিং করে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন।
আর গত সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ঢাকায় এসে সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও হস্তক্ষেপ প্রত্যাশিত নয়।