চট্টগ্রামরাজনীতি

পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে তৃণমূলে চাপ থাকলেও নীরব কেন্দ্র

নতুন কমিটি গঠনে তৃণমূল থেকে চাপ থাকলেও নীরব কেন্দ্র। তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হবে বলে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে দলের মধ্যে শুরু হয়েছে তোড়জোড়।

তিন গুরুত্বপূর্ণ কমিটি নিয়ে চট্টগ্রামে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিন আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলার কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। কখন দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে তা নিয়েও অনিশ্চিয়তার মধ্যে আছে নেতাকর্মীরা।

বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর মহানগর ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৩৯ সদস্যের এ কমিটিতে মহানগরে সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল। অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারকে আহ্বায়ক করে ৪৩ সদস্যের উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এ দুই কমিটি ঘোষণার প্রায় সাড়ে তিন বছর চললেও পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি অথবা নতুন সম্মেলন করে মূল কমিটি গঠনের কোনো প্রক্রিয়া না দেখায় হতাশায় ভুগছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় উত্তর জেলা বিএপির নেতৃত্বের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ কারণে ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচি’ পালনের মধ্যে আটকে আছে আহ্বায়ক কমিটি। এ কমিটিতে নেই কোনো ‘সদস্য সচিব’ এর পদ। তাই আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের নেতৃত্বে এ কমিটির সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসলেই এ কমিটির তুলনামূলক সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি পায়। তিনি না থাকলে অনেকটা সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করে।

বর্তমানে দক্ষিণ জেলা বিএনপির মূল নেতৃত্বে রয়েছেন আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান। ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর ৬৫ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বিএনপির তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, আংশিক আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর কারণে দলের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসছে না। তাছাড়া দলের মধ্যে যারা সক্রিয় নেতা তারাও দীর্ঘদিন ধরে আহ্বায়ক কমিটির শুধুমাত্র ‘সদস্য’ পরিচয় দিতে পারেন, কোনো পদ-পদবি পরিচয় দিতে পারেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা বিরাজ করছে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন একটি কমিটি হয় দুই বছর মেয়াদের। কিন্তু মূল কমিটি গঠনের আগে ঘোষণা দেওয়া হয় আহ্বায়ক কমিটি। কয়েক মাস মেয়াদের এ আহ্বায়ক কমিটিকে কাজ করতে হয় বছরের পর বছর। তাতে সাংগঠনিক কার্যক্রমে তেমন একটা গতি আসছে না। এ অবস্থায় কমিটির ভিতরে-বাইরে এক ধরনের হতাশা সৃষ্টি হয়।

জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আমরাও চাই নগরে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হোক। এ নিয়েও আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। এখন পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে। এরপর সারাদেশে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর ও জেলা কমিটিগুলো গঠন করা হবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। খুব সহসা সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d