জাতীয়

বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যু

বগুড়ায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক আইনজীবীর সহকারী হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৮টার পরে তার মৃত্যু হয়। হাবিবুর রহমান (৪২) বগুড়া জেলা কোর্টের আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি জেলা আইনজীবীর সহকারী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। হাবিবুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার চকজোড়া গ্রামে।

পরিবারের সদস্য এবং হাবিবুরের সহকর্মীদের অভিযোগ, পুলিশ কোনো মামলা বা পরোয়ানা ছাড়াই হাবিবুরকে কোর্ট চত্বর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।

হাবিবুর রহমানের সহকর্মী এবং বগুড়া জেলা আইনজীবীর সহকারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আজ কোর্ট শেষে বিকেলে ডিবি পুলিশ কোনো পরোয়ানা ছাড়াই তাকে কোর্ট চত্বর থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে রাতে হাসপাতালে আমরা তাকে মৃত পাই। ডিবি পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।
হাবিবুরের মামা আব্দুল হান্নান মুকুল এবং ছোট ভাই আল-আমিন একই অভিযোগ তোলেন।

আল-আমিন বলেন, এই নির্যাতনের কারণেই আজ আমেরিকা স্যাংশন দিচ্ছে। এই পুলিশের কারণেই দেশের মানুষের সমস্যা হবে। আমরা এদের বিচার চাই।

এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আক্তার বলেন, একটি হত্যা মামলার আসামি সন্দেহে তাকে আনা হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিবির একজন উপপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা তাকে নিয়ে ডিবি অফিসে আসি সন্ধ্যা ৬টার পরে। সেখানে কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া একটি হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন। সেই সাক্ষীর মতে হাবিবুর সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ডিবি অফিসে সেই নারীকে দেখেই হাবিবুর অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে কোনো অত্যাচার করা হয়নি।’

রোগীকে কী অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা (জরুরি বিভাগ) ডাক্তার আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে পুলিশের লোকজন (সিভিল ড্রেস) তাকে হাসপাতালে অজ্ঞান অবস্থায় নিয়ে আসেন। তারা বুকে ব্যথার কথা বলেন। আমরা অক্সিজেন দিয়ে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা করি। রাত সাড়ে ৮টার পরে হাবিবুর মারা যান।

শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল কি না জানতে চাইলে আতিকুর বলেন, ‘ইমার্জেন্সিতে আমরা এত ভালোভাবে খেয়াল করিনি।’

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পরে আসল কারণ জানা যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d