বাঁশখালীর সাবেক এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
সাবেক সাংসদ ও বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর।
শনিবার (২৯ জুন) বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়েজিত দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে এই অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর।
সমাবেশে অধ্যাপক আবদুল গফুর বলেন, সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বুঝাতে চেষ্টা করেছেন নিজের বাড়ি না করে তিনি দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করেছেন। অথচ এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভণ্ডামি।’
মিথ্যার উপরই সাবেক এমপির জন্ম আখ্যা দিয়ে অধ্যাপক আবদুল গফুর আরো বলেন, ‘দলীয় কার্যালয় নির্মাণে সাবেক এমপি ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন। খানখানাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা, সাবেক চেয়ারম্যান বদরুদ্দীন চৌধুরীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা, কাথরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইবনে আমিনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা, পুকুরিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা মাহবু্ব আলীর কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালীব সাদলীর কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে অফিস সংলগ্ন ছড়ায় গাইড ওয়াল নির্মাণ করেন মোস্তাফিজ। এভাবে আরও বহু মানুষের কাছে টাকা নিয়েছেন সাবেক এমপি মোস্তাফিজ।’
সাবেক এমপি বিগত দিনে আওয়ামী লীগকে নিজের আখের গোছানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে উপজেলা আওয়ামী লীগকে নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। বিগত দিনে টিআর কাবিখাসহ সরকারি টাকা লুটপাট ও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে কমিশন আদায়, চাকরি দেয়ার নামে টাকা আদায়, এমনকি সাবেক এমপি ও তার অনুগতদের কারণে বাড়ির বউ-ঝি পর্যন্ত নিরাপদ ছিল না।’
সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল দাশ বলেন, ‘যারা মুলধারার নামে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ডেকে বিগত দিনে বক্তব্য রেখেছেন গলাবাজি করেছেন তারা ভিলেন। এই ভিলেনদের আগামী দিনে প্রতিহত করা হবে।’
শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েস সরওয়ার সুমন বলেন, ‘বর্তমান এমপির বাইরে কোন মুলধারা নেই। এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন ও স্নেহধন্য। তার নেতৃত্বেই বাঁশখালী আওয়ামী লীগ চলবে।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু সৈয়দ, দক্ষিণ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার (অর্থ) আবদুর রাজ্জাক, সাবেক পৌর মেয়র শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী, মাস্টার শামসুল আলম, শীলকূপ ইউপি চেয়ারম্যান কায়েস সরওয়ার সুমন, বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরী ইউনুস, কাথরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইবনে আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামল দাশ, সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক সিকদার, সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, আইন কলেজের সাবেক ভিপি রায়হানুল হক প্রমুখ।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাঁশখালী আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে বলেন, আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় করার জন্য কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। আমি নিজের টাকা দিয়েই করেছি। যদি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকি, তাহলে গফুরকে প্রমাণ দিতে বলুন। সে এতোদিন পর কেন এসব বলতেছে? জাতীয় নির্বাচনের সময় আমার সাথে ছিল। তখন আমার কাছ থেকে অনেক টাকা মেরে দিয়েছে। আমি কেন্দ্র খরচ দিয়েছিলাম তার হাতে। টাকাগুলো কেন্দ্রে না দিয়ে নিজেই মেরে দিয়েছিল। সে নির্বাচনের সময় মূলত আমার তথ্য পাচার করার জন্য এসেছিল বর্তমান এমপির সাথে আঁতাত করে। আমি কী করতেছি না করতেছি সব পাচার করতো বর্তমান এমপিকে। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি।