বাংলাদেশের কাছে পরাজয়ের পর পাকিস্তানের ক্রিকেটে নতুন উদ্যোগ
পাকিস্তানের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। পাকিস্তান ক্রিকেটের ‘গৌরব ও উৎকর্ষ’ পুনরুদ্ধার লক্ষ্যে পিসিবির এই আয়োজন। শুরুটা হতে যাচ্ছে বিশেষ এক সভা দিয়ে, যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কানেকশন ক্যাম্প।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব সংস্করণেই পাকিস্তানের পারফরম্যান্স পড়তির দিকে ছিল। এবার দেশের মাঠে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর এখন পাকিস্তানের ক্রিকেট পুরোপুরি টালমাটাল। সমালোচনার ঝড় বইছে দেশজুড়ে। তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই।
সব কিছু মিলিয়েই এখন পাকিস্তান ক্রিকেটের খোলনলচে পাল্টে ফেলতে চাচ্ছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। ‘কানেকশন ক্যাম্প’ আয়োজনের ভাবনাটি মূলত তারই। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এই সভায় দুই সংস্করণের কোচ জেসন গিলেস্পি ও গ্যারি কার্স্টেনের সঙ্গে থাকবের পিসিবি প্রধান নিজেও। এছাড়াও দুই সংস্করণের অধিনায়ক শান মাসুদ ও বাবর আজমের পাশাপাশি থাকবেন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের অনেকে।
বিভিন্ন সংস্করণে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলে থাকে পাকিস্তান, সেটিকে বদলে নতুন ঘরানার ক্রিকেট রপ্ত করা ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সেই একই ঘরানা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা থেকেই এই ক্যাম্পের আয়োজন করা হচ্ছে।
এই ক্যাম্পের পথ ধরে আস্তে আস্তে অন্যান্য পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। ২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ইংল্যান্ড যেভাবে নিজেদের বদলে ফেলেছিল, সেটিকে আদর্শ হিসেবে ধরেই মূলত পাকিস্তানের বোর্ডের এই উদ্যোগ। তবে ইংলিশ ক্রিকেটে শক্তির গভীরতা ছিল এবং পর্যাপ্ত প্রতিভাবান ও কার্যকর ক্রিকেটার ছিল বলে তাদের পরিবর্তনটা দ্রুত হয়েছিল। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সেটা কঠিন।
পিসিবি চেয়ারম্যান স্বয়ং কদিন আগে স্বীকার করেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিভাবান ক্রিকেটারের কমতি দেখছেন না। জাতীয় দল তো এখন নড়বড়েই। ইংল্যান্ডের মতো এতটা দ্রুত পরিবর্তন করা তাই পাকিস্তানের জন্য হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
স্বল্পমেয়াদী কোনো সমাধান নিয়ে অবশ্য পিসিবি ভাবছেও না এই মুহূর্তে। সার্বিক পর্যালোচনার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে তাই অধিনায়কত্ব পরিবর্তনের মতো ব্যাপারগুলি থাকবে না। টেস্ট অধিনায়ক শান মাসুদকে নিয়ে প্রশ্নের পাহাড় জমেছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্ট অধিনায়ক বাবর আজমের দিকেও আঙুল উঠছে। তবে সেখানে পরিবর্তন হলে সেসব ভিন্নভাবে করা হবে। এই ‘কানেকশন ক্যাম্প’ ও সার্বিক পরিবর্তনে মূলত দেশের ক্রিকেটের মৌলিক দিক প্রাধান্য পাবে।
ইংল্যান্ডের পথে হাঁটার শুরুটা কীভাবে হবে, তা অবশ্য সুনির্দিষ্টভাবে এখনও জানা নেই পিসিবির। তবে চেয়ারম্যান নাকভির বিশ্বাস, ‘কানেকশন ক্যাম্প’ দিয়েই শুরুটা হবে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিবর্তনের পালা অবশ্য এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। ঘরোয়া ওয়ানডে প্রতিযোগিতা নতুন রূপে শুরু হচ্ছে ‘ওয়ানডে চ্যাম্পিয়ন্স কাপ’ নামে। ফায়সালাবাদে আসরটি শুরু হবে বৃহস্পতিবার, শেষ হবে ২৯ সেপ্টেম্বর। পিসিবি চেয়ারম্যানের বিশ্বাস, এই আসর থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটার উঠে আসবে।
এরকম আরও কিছু পরিবর্তন দৃশ্যমান হবে সামনে। ‘কানেকশন ক্যাম্প’ থেকে আরও কিছু পরিকল্পনা আসবে বলে ধারণা করছে পিসিবি।