বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে সারওয়ার্দী ৮ দিনের রিমান্ডে
সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। সারওয়ার্দীর আইনজীবী জামিন চান। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করে সারওয়ার্দীকে আদালতে তোলা হয়।
মঙ্গলবার সেনানিবাসে ‘অবাঞ্ছিত’ সারওয়ার্দীকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরাফিসহ হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার বিমান বন্দর থেকে মিয়ান আরাফি ওরফে বেল্লালকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। সোমবার তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করে। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুদ্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশেরর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও সরকারি গাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি মিয়ান আরাফি, হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছু সংবাদমাধ্যমের সামেন উপস্থিত হন। এসময় ১ নম্বর আসামি মিয়ান আরাফি নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
সেখানে ১ নম্বর আসামি আরাফি দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এই আসামি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদি আরও অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন মিয়ান আরাফির মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। ১ নম্বর আসামি অন্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামির বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।