চট্টগ্রাম

বিপ্লব উদ্যান ধ্বংস করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে আল্টিমেটাম

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও ঐতিহ্যে সংরক্ষণের নামে সবুজ উদ্যান ধ্বংস করে চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হচ্ছে বাণিজ্যিক স্থাপনা। নগরীর দুই নম্বর গেইটে বিপ্লব উদ্যানের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দিয়ে সিটি করপোরেশন করছে এমন মানববিধ্বংসী কাজ। এতে সংকুচিত হচ্ছে নগরবাসীর অবসরে বিনোদন ও প্রশান্তির জায়গা।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সহ নানা সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন করে তিন দিনের মধ্যে কাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

স্বাধীনতার স্মৃতি বিজড়িত বিপ্লব উদ্যানের এ নতুন নকশায় দেখা যায় মাঠে বাণিজ্যিক স্থাপনা ডোমের মতো ৪টি কিডস ও গেমস জোন। পুর্বপাশে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রদর্শনী কেন্দ্রের নামে দোকান ও ফুডকোরট। ওপরে যাদিঘর ও কপি শপ। ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় উদ্যানে ৫ শতাংশের বেশি কংক্রিট অবকাঠামোর নিয়ম না থাকলেও এখানে ৫০ শতাংশের বেশি। মূলত সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নগরী দুই নম্বর গেইটের উদ্যানটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ধ্বংস করা হচ্ছে।

বাস্তব অবস্থা আরও নাজুক। চারদিকে কাটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। দোকান বরাদ্দ দিয়ে ভেতরে চলছে স্কেভেটর দিয়ে নির্মাণ কাজ। বিনোদন, উন্মুক্ত পরিসর, নগরবাসীর আনন্দ ও প্রশান্তির জায়গাটুকু ধ্বংস করা হচ্ছে।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, নগরীর এক টুকরো সবুজ ছিল তাও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন, মানুষের নিশ্বাস ফেলার জায়গা নেই। অবসরে ছুটির দিনে এক প্রশান্তির জায়গা আর থাকবে না।

উদ্যানের চারদিকে যুক্তিযুদ্ধের নানা স্লোগান সম্বলিত ব্যানারে আড়াল করে ভেতর চলছে কাজ। রিফর্ম কনসোর্টিয়াম নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করেছে সিটি করপোরেশন। চুক্তি অনুযায়ী উদ্যানে বিলবোর্ড, মেলা-উৎসব, কিয়স্ক বা ছোট ছোট স্থাপনা সবই করা যাবে। জঞ্জালে পরিনতের এ কর্মযজ্ঞ বন্ধের দাবি নাগরিক সমাজের।

এদিকে উদ্যান ধ্বংসের প্রতিবাদে শনিবার সকালে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি(বেলা) চট্টগ্রাম সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রসহ নানা সামাজিক সংগঠন। দাবি তিন দিনের মধ্যে বন্ধ করতে হবে এসব বাণিজ্যিক স্থাপনা। এসময় বক্তাতারা তিন দিনের মধ্যে এসব স্থাপনা বন্ধের দাবি জানান।

এর আগে ২০১৮ সালে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০ বছরের চুক্তি করে ২’শো ফুট দীর্ঘ ও ৫০ ফুট প্রস্থের ফুডকোর্ট নির্মাণ করেছিল সিটি করপোরেশন। সেটি বাদ দিয়ে বর্তমানে ২৫ বছরের আরেকটি চুক্তি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d