চট্টগ্রাম

বিশ্বমন্দার কারণে খালি কন্টেইনারের স্তূপ

বিশ্বমন্দার কারণে সিঙ্গাপুর-কলম্বোর মতো ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোতেও কমেছে পণ্যপরিবহনের চাহিদা। এতে চট্টগ্রাম বন্দর এবং অফ ডকগুলো এখন খালি কন্টেইনার রাখার ডিপো হয়ে ওঠেছে।

বেসরকারি অফ ডক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২১টি বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) ৪৯ হাজার ৫৪টি খালি কন্টেইনারের মজুত রয়েছে। এর বিপরীতে এসব আইসিডিতে আমদানি-রফতানি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার রয়েছে ৩২ হাজার ৮৭৩টি। এর মধ্যে কেডিএস ডিপোতে রেকর্ড ৫ হাজার ৪৯৬টি খালি কন্টেইনার মজুত আছে।

বিশ্বজুড়ে মন্দা পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ধস নামায় বাংলাদেশে খালি কন্টেইনারের স্তূপ জমছে। তবে বিশ্বের উন্নত বন্দরগুলো খালি কন্টেইনার মজুতে নিরুৎসাহিত করলেও এর বিপরীতে দিনে ১০০ থেকে ২০০ টাকা ভাড়ায় খালি কন্টেইনার রাখছে বাংলাদেশের অফ ডক মালিকরা।

বিকডার মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, দেশে খালি কন্টেইনার রাখার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। এজন্য বিদেশি শিপিং লাইন কোম্পানিগুলো কন্টেইনার মজুতের জন্য বাংলাদেশের অফ ডকগুলোকে বেছে নিয়েছে।

বন্দরসূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে ২০ ফুট সাইজের একটি খালি কন্টেইনার রাখার ভাড়া দৈনিক ৬ মার্কিন ডলার এবং ৪০ ফুট ১২ মার্কিন ডলার। আর অফ ডকে সেই ভাড়া যথাক্রমে মাত্র ১০০ এবং ২০০ টাকা।

অথচ সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর উন্নত অধিকাংশ বন্দরেই নিজেদের ইয়ার্ডে খালি কন্টেইনার জমা রাখতে বন্দরগুলো আগ্রহী হচ্ছে না। যে কারণে এসব কন্টেইনারের গন্তব্য এখন চট্টগ্রাম বন্দর। বাংলাদেশ থেকে রফতানি কিছুটা কমে যাওয়ায় খালি কন্টেইনার জমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, দেশের আমদানি-রফতানি আগের থেকে অনেক কমে গেছে। এতে জমছে খালি কন্টেইনারের স্তূপ।

এদিকে, প্রাইভেট আইসিডিগুলোর মতো চট্টগ্রাম বন্দরেও জমছে খালি কন্টেইনারের স্তূপ। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ২ হাজার ৪৪৭টি খালি কন্টেইনারের মজুত ছিল। এর মধ্যে এনসিটিতেই রয়েছে ১ হাজার ৯৩৫টি খালি কন্টেইনার। বাকি ৫১২টি রয়েছে জেনারেল কার্গো বার্থে।

তবে বন্দরের ইয়ার্ডে খালি কন্টেইনারের স্তূপ জমার আগেই অফ ডকে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, বন্দরে দেড় হাজারের মতো খালি কন্টেইনার রয়েছে। এটা খুব এটা উদ্বেগজনক না। বেশিরভাগ খালি কন্টেইনার ডিপোতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

মূলত আমদানি পণ্য নিয়ে আসা এসব কন্টেইনার পুনরায় রফতানি পণ্য বোঝাই করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অনেক সময় আমদানি পণ্যের চাপ থাকলে বিদেশি শিপিং লাইনগুলো খালি কন্টেইনারও জাহাজে করে নিয়ে নিজেদের ইয়ার্ডে মজুত রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d