মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি কবে
‘শীঘ্রই চালু হবে হলিডে মার্কেট, তালিকা হচ্ছে প্রকৃত হকারদের।’ গত রবিবার মধ্যরাত ৩টা ৩৩ মিনিটে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর ফেসবুক পেজ থেকে এই পোস্ট শেয়ার করেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মেয়রের ওই পোস্টে ৩৭১টি কমেন্ট আসে। পোস্টের ৯০ ভাগের বেশি কমেন্টই মশার উৎপাত নিয়ে। পোস্টে মশার যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান মেয়রকে। এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নানাভাবে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অতিষ্ঠ মানুষ। সেখানে সবাই মশা থেকে রক্ষা পেতে সিটি কর্পোরেশনকে নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর তাগিদ দিয়েছেন।
মোহাম্মদ শাহজাহান উদ্দিন নামের একজন কমেন্টে লিখেছেন, মশার জ্বালা নিবারণ হকারদের চেয়ে বেশি জরুরি। রাস্তায়, মসজিদে, বাসায় কোনো জায়গায় শান্তি নেই মশার জন্য। বিগত দিনগুলো থেকে বর্তমানে মারাত্মক হয়েছে মশা। নগরবাসীর অভিযোগ- বাসা, অফিস, মসজিদ, মার্কেট এমনকি গণপরিবহণেও মশা থেকে নিস্তার মিলছে না। রাতে-দিনে সমানতালে কামড়াচ্ছে মশা। এক কথায় মশার জ¦ালায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে খাল ও নালা-নর্দমার আশপাশে থাকা বাসা-বাড়ির মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে মশা। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে দিনের বেলায়ও মশারির ভেতর আশ্রয় নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নগরবাসী বলছেন, মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের তৎপরতা খুবই কম। তবে সিটি কর্পোরেশনের দাবি, মশা নিধনে কাজ করছেন তারা। আগামী তিন মাসের মধ্যে মশার উপদ্রব কমে যাবে বলে জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।
১৯ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের মিয়াখান মার্কেটের ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, দোকানে কাস্টমার এসে এক মিনিটও বসতে পারছেন না। দিনে-রাতে সমানতালে মশা কামড়াচ্ছে। এই এলাকায় সারাবছরই মশার উপদ্রব থাকে। কিন্তু এখানে সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম খুব একটা দেখা যায় না। দোকানে দৈনিক ৪-৫টি কয়েল জ্বালাতে হয়। বাসায়ও ২-৩টা কয়েল লাগে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন মশার কয়েলের পেছনে আমার ৫০ টাকার মত খরচ হয়। যা মাসে দেড় হাজার টাকা।
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল সাঈদ বলেন, মশার উৎপাত থেকে বাঁচতে কয়েল, অ্যারোসল ব্যবহার করি। এর বাইরে মশা মারার ব্যাটও কিনে রেখেছি। তাও মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাচ্ছি না। আর কোন উপায় না দেখে গত সপ্তাহে মশা প্রতিরোধে বাসার জানালায় লোহার জালি লাগিয়েছি। তাও কিভাবে যেন মশা ঘরে ঢুকে যাচ্ছে। ইদানিং মশার ওষুধ ছিটাতেও দেখি না। সিটি কর্পোরেশনের এ বিষয়ে কোন তদারকি আছে মনে হয় না।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. সরফুল ইসলাম (মাহি) বলেন, ওয়ার্ডকেন্দ্রিক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মশার ওষুধ দেয়া হবে। চসিকের জোন কর্মকর্তা, কাউন্সিলর, স্প্রে-ম্যানের সমন্বয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কোন কোন এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি তা চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা আশা করছি আগামী তিনমাসের মধ্যে মশার উপদ্রব কমে আসবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে নগরীর খালগুলোতে জলাবদ্ধতার কাজ চলমান থাকায় পানির প্রবাহে ধীর গতি। এছাড়া ড্রেন ও নালাগুলোতেও পানি জমে থাকে। এসবের কারণেও মশার উপদ্রব বাড়ে। একটি এলাকায় প্রতি ৭২ ঘণ্টা পর পর স্প্রে করার কথা রয়েছে। তবে এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়।