মহাসমাবেশ ঘিরে কৌশলী বিএনপি, চলছে নানামুখী প্রস্তুতি
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান রয়েছে বিএনপির আন্দোলন। দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে দলটি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনে বিএনপি খুব একটা সফল এমনটা বলা যাবে না। সরকারের এই শেষ সময় স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি শীর্ষ নেতারা বলছেন, এবার বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত সমাবেশই মহাসমাবেশে রূপান্তরিত হবে। এর আগে ১৬ অক্টোবর যুব সমাবেশ সারা দেশের নেতা-কর্মীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি চাঙ্গা হয়েছেন। এবারের মহাসমাবেশে তারই প্রতিফলন ঘটবে।
বিএনপি ঢাকার নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দিয়েছে। যদি অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পছন্দের জায়গার পরিবর্তে বিকল্প কোনো জায়গার কথা বলা হয়, তখন দলটি তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে অনুমতি দেওয়া না হলে বিএনপি ২৮ অক্টোবরেই তাদের মহাসমাবেশ করার চেষ্টা করবে বলে দলটির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বাধা এলে এবার প্রতিরোধ গড়ে রাজপথে টিকে থাকার চেষ্টা তাঁদের থাকবে।
মহাসমাবেশে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম। টিম প্রধানদের সঙ্গে সমাবেশের অগ্রগতি নিয়ে দফায় দফায় কথা বলছেন সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারা। শীর্ষ নেতারাও এবার মহাসমাবেশ নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। জানা গেছে, পুলিশি গ্রেপ্তারের মুখে বিএনপি মনে করছে সমাবেশের দুই-একদিন আগে থেকেই ঢাকায় প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে৷ কৌশলে বাস ও লঞ্চ চলাচলে বাধা দেয়া হতে পারে৷ পথে পথে নেতা-কর্মীদের আটক করা হতে পারে৷ তাই তাদের ২৫ তারিখের মধ্যেই এলাকা ছেড়ে ঢাকায় আসতে বলা হয়েছে৷ আর তাদের যেকোনো কৌশলে গ্রেপ্তার এড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে৷
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভা শেষে গতকাল রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মহাসমাবেশের কর্মসূচি দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৭টি গায়েবি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১২ হাজার ৭৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৬০ জনকে।নতুন করে ধরপাকড় ও মামলার ব্যাপারে নেতা–কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
তবে মামলার বা গ্রেপ্তারের ভয় উপেক্ষা করে দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির সূত্রগুলো বলছে।
এর আগে ১৮ অক্টোবর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচিকে আংশিক কর্মসূচি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে।