মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সিপিবির
মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের মূল ভিত্তির ওপর আঘাতকারীদের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানের মূল ভিত্তির ওপর আঘাতকারীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যাদের প্রশ্রয়ে এরা দুঃসাহস দেখাচ্ছে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী শাসকেরা নানা ফ্যাসিস্ট কার্যকলাপ চালিয়েছে। এখন সময় এসেছে মুক্তিযুদ্ধ তথা গণযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা জনগণের কাছে তুলে ধরা। ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে ফ্যাসিবাদের অবসান ও বৈষম্যের অবসানের কথা বলা হয়েছে, সেটি সম্ভব মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা, সাম্য-মানবিক মর্যাদা-সামাজিক ন্যায় বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানের চার মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
আমাদের মূল সংবিধানের কোন কোন ক্ষেত্রে নেতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং শুরুতে কত অসম্পূর্ণতাও রয়েছে– এ কথাও আমরা অনেক দিন ধরে বলে এসেছি। এ অসম্পূর্ণতা সম্পূর্ণ করা ও নেতিবাচক পরিবর্তনগুলো দূর করার কাজেও হাত দিতে হবে। তবে অবশ্যই সংবিধানের মূল ভিত্তি ঠিক রেখেই। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, অগণতান্ত্রিক কালা কানুন বাতিল, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন দূর করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা, বিভিন্ন সময়ে সংবিধান সংশোধনীতে যেসব নতুন স্বৈরাচারী উপাদান সংযোজিত হয়েছে তা বাতিল, জনগণের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধানের বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করেই আদি সংবিধানের নেতিবাচক পরিবর্তন ও অসম্পূর্ণতা দূর করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি অনেকে সংবিধানের বিরোধিতা করতে গিয়ে প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বিরোধিতায় নেমেছেন। এ অপশক্তিকে দেশবাসী গ্রহণ করবে না।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিস্ট শাসকদের পরাভূত করা হয়েছে, অন্য কোনো স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিস্টের ছায়ায় কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় নামে দেশবাসী তাদের প্রতিহত করবে।
বিবৃতিতে দেশবাসীকে বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সাধারণ ছাত্র-জনতাকে এসব অপশক্তি সম্পর্কে সজাগ থেকে এদের প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয়।