ধর্ম

মুয়াজ্জিন ‘সেহরির সময় শেষ’ বলার পর খেলে রোজা হবে?

রোজাদার ব্যক্তি যেন সেহরিতে সহজেই উঠতে পারেন, এজন্য আমাদের দেশে রাতের শেষ অংশে ডাকার প্রচলন রয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর মুয়াজ্জিন বা মসজিদে দায়িত্বরত কোনো একজন জানিয়ে দেন সেহরি কতটুকু সময় বাকি আছে এবং শেষ সময় কখন তাও জানিয়ে দেওয়া হয়।

মুয়াজ্জিন শেষ রাতে সেহরির জন্য ডাকার পরেও কেউ যদি জাগতে দেরি করে অথবা মুয়াজ্জিন ‘সেহরির সময় শেষ’ বলা পর খাবার খায় তাহলে তার রোজা হবে কিনা— এক্ষেত্রে মূল বিষয় হলো, সুবহে সাদিকের সময় সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নেওয়া।

কারণ, মুয়াজ্জিনের ‘সেহরির সময় শেষ’ বলা বা না বলা, কিংবা আজান দেওয়া বা না দেওয়ার সঙ্গে সেহরি খাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। সেহরি খাওয়ার সম্পর্ক হলো সুবহে সাদিক শুরু হবার সঙ্গে।

যদি সুবহে সাদিক শুরু হয়ে যায়, তাহলে মুয়াজ্জিন না বললেও এবং আজান না দিলেও খাবার খেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

আর সুবহে সাদিক শুরু না হলে, মুয়াজ্জিন ‘সেহরির সময় শেষ’ বললে বা আজান দিলেও খাবার খাওয়ার সুযোগ আছে।

তবে আমাদের দেশে মুয়াজ্জিনরা সাধারণত সুবহে সাদিক শুরু হলেই ‘সেহরির সময় শেষ’ বলে ঘোষণা দেন। তাই মুয়াজ্জিনের ঘোষণার সময় যদি সুবহে সাদিক হয়ে থাকে, তথা সেহরির সময় শেষ হয়ে থাকে, তাহলে খাবার খেলে রোজাভেঙ্গে যাবে। এবং রমজান শেষে সেই রোজার কাজা আদায় করতে হবে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ

আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। (সূরা বাকারা, আয়াত,১৮৭)

রোজার জন্য সেহরি…

রোজা রাখার জন্য সেহরি খাওয়া গুরুত্বপুর্ণ। রাসূল সা. বলেছেন,‘আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টান আর মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।’ (মুসলিম, হাদিস, ১৮৪৩; তিরমিজি, হাদিস, ৬৪২)

অপর এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সেহরিতে বরকত আছে।’ (বুখারি, হাদিস, ১৯২৩)

সেহরি কিছুটা দেরিতে করার কথা বলা হয়েছে হাদিসে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিনটি কাজ নবুয়তের আদর্শের অন্তর্ভুক্ত; জলদি ইফতার করা, দেরি করে (শেষ সময়ে) সেহরি খাওয়া এবং নামাজে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখা। (তাবারানী, মুজাম, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ২/১০৫)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d